"রোল নাম্বার শূন্য" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ‘তুমি কয়দিন এই স্কুলে পড়তে চাচ্ছ, ভালাে। কিন্তু বড় ধরনের দুষ্টুমি করে কোনাে ক্ষতি করবে না তাে আমাদের।' হেড স্যার চেয়ারটা আরাে এক... See more
"রোল নাম্বার শূন্য" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ‘তুমি কয়দিন এই স্কুলে পড়তে চাচ্ছ, ভালাে। কিন্তু বড় ধরনের দুষ্টুমি করে কোনাে ক্ষতি করবে না তাে আমাদের।' হেড স্যার চেয়ারটা আরাে একটু পেছনে ঠেলে বললেন, তােমাকে বিশ্বাস করব কীভাবে আমরা!' ‘বিশ্বাস আসলে অন্য রকম জিনিস স্যার।' রাসাদ মাথা চুলকাতেই চুলকাতেই বলল, ‘বিশ্বাসের ইংরেজি হচ্ছে Believe এই Believe-এর মাঝেই কিন্তু lie লুকিয়ে আছে, যার মানে মিথ্যা।' সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন রাসাদের দিকে। আবার ঘামতে শুরু করেছে সে। এতক্ষণ সে যা বলেছে, তার সবগুলােই মিথ্যা বলেছে সে দুর্দান্ত একটা কাজ করতে সে এই স্কুলে এসেছে। আপাতত কাউকে বলা যাবে না সেটা। খুব গােপনভাবে কাজটা করতে হবে তার। কেউ টের পেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে স্কুলের, স্কুলের সব ছাত্রের!
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।
খুব বেশি ভাল লাগে নি। তবে রাসাদের হাঁসি মুখ অনেক ভাল লেগেছে। সমস্যা অনেক বড় হলেও হাঁসি মুখে সমাধান খুঁজে বের করা।
Read More
Was this review helpful to you?
By Jannatul Naym Pieal,
10 Apr 2014
Verified Purchase
স্কুলপড়ুয়া কিশোর কিশোরিদের জন্য আবারো একটা কিশোর উপন্যাস উপহার দিলেন সুমন্ত আসলাম। আর এই উপন্যাসের মাধ্যমে যেই গল্পটি তিনি বলতে চেয়েছেন, তা কিশোরদের ভালোই বিনোদিত করবে। নিখাদ আনন্দের উপাদান হয়ে উঠবে। ভিন্ন ধরণের আঙ্গিক গঠনে রচিত উপন্যাস 'রোল নাম্বার শূন্য'। সাধারণত কিশোর উপন্যাসগুলোতে দেখা যায়, কয়েকটা কিশোরের জীবন বেশ ভালোভাবেই কাটছে। হঠাৎ হয়ত তারা কোন একটা সমস্যায় পড়ল। তারপর কিভাবে তারা সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পেল, সেটাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় কাহিনী। কিন্তু 'রোল নাম্বার শূন্য' সেদিক থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কাহিনীর শুরুই হয়েছে কোন এক অজানা সমস্যা দিয়ে। সেই সমস্যার কথা অবশ্য প্রথমেই প্রকাশ করেন না লেখক। সমস্যাটা যে আসলে কি, সেটা নিয়েও যথেষ্ট সাসপেন্সের মধ্যে থাকতে হয় পাঠককে। এমনকি এটি এমনই এক ভিন্নধর্মী উপন্যাস যেখানে সমস্যার সমাধান বেরোয় আগে, কিন্তু সমস্যাটা যে আসলে কি তা জানতে পড়ে যেতে হয় একেবারে শেষ অব্দি!
ক্লাস সিক্সে পাঠরত সাতিল কোন এক বিশাল সমস্যায় পড়ে, যার সমাধান করতে না পারলে বিপদে সে শুধু একা নয়, পড়বে তার স্কুলের সবাই। সব ক্লাসের সব ছেলেরাই। নিরুপায় হয়ে সেই বিশেষ সমস্যাটার সমাধান করতে সে ডেকে আনে তার ছোটমামাকে যার নাম রাসাদ আর পড়ে অন্য এক স্কুলে ক্লাস এইটে। অত্যন্ত বুদ্ধিমান রাসাদ সাতিলদের স্কুলের হেডস্যারের সাথে কথা বলে এমন ব্যবস্থা করে নেয় যাতে সে কয়েকটা দিন ঐ স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীতে ক্লাস করতে পারে রোল নাম্বার শুন্য হিসেবে। আর তারপর সেই ক্লাস করার ফাঁকে ফাঁকেই সে এমন কিছু কান্ড করে, যার ফলে গল্পের অজানা সমস্যাটির সমাধানের পথ ক্রমশ সুগম হতে থাকে। এবং একটা সময় এসে তা সমাধানও হয়ে যায়। আর তখনই পরিষ্কার হয় যে ঠিক কোন সমস্যা নিয়ে এত চিন্তিত ছিল সাতিল যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত তার স্কুলের সবাই।
দারুণ উপভোগ্য উপন্যাস 'রোল নাম্বার শুন্য'। লেখক রাসাদের মুখ থেকে চুটকি টাইপের যেসব বুদ্ধিদীপ্ত কথা বের করে এনেছেন, সেগুলো ক্ষুদে পাঠকদের নিঃসন্দেহে চমৎকৃত করবে। তবে এটাও মনে রাখা ভাল যে সেসবের অধিকাংশই কিন্তু অনেক পুরনো। জোর করে উপন্যাসের ভেতর লেখক সেগুলোকে যেভাবে ঢোকাতে চেয়েছেন, তা না করে কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে যদি তিনি প্রমাণের চেষ্টা করতেন যে রাসাদ চরিত্রটি আসলেই অনেক বুদ্ধিমান, সেটা হয়ত অপেক্ষাকৃত ভাল দেখাত। তাছাড়া রাসাদের সাথে ক্লাস সিক্স আর সেভেনের ছাত্রদের আলাপচারিতাও খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। প্রথমত, মাত্র ক্লাস এইটে পড়া একটা ছেলে যতই বুদ্ধিমান হোক না কেন, তার মুখ থেকে একটার পর একটা দার্শনিক কথাবার্তা কখনোই 'বিলিভেবল' নয়। সেগুলো বড্ড আরোপিত মনে হয়। আর রাসাদ যে ভঙ্গিতে কথা বলেছে সেটাও অনেক বড় কোন মানুষের মত, একটা কিশোরের মত নয়। ফলে লেখক যে একটা চরিত্রের ভিতরই জোর করে অসংখ্য গুণ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন, সেটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যার ফলে আমি এ-ও মনে করি যে শেষ পর্যন্ত রাসাদ চরিত্রটি স্বয়ংসম্পূর্ণ তো হয়ই নি বরং জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছে।
পাঠককে চিরচেনা কিছু চুটকির মাধ্যমে বিস্ময়ের ঘোরে বেধে রাখতে গিয়ে লেখক কাহিনীতে খুব কম দৃশ্যেরই অবতারণা ঘটিয়েছেন। দৃশ্যপট যদি আরেকটু বাড়ত, তাহলে কাহিনিটা আরেকটু শক্তিশালী হতে পারত। কারণ সংলাপ শুধু একটি দৃশ্যকে শক্তিশালী করে কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক শক্তিশালী দৃশ্যের অভাবে একটা কাহিনী ঝুলে পড়তে পারে। তবে কিশোর উপন্যাস বলেই হয়ত এই ঝুলে যাওয়াটা এই উপন্যাসের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রকট হবে না। তাছাড়া যে কয়টি ঘটনার উল্লেখ এই কাহিনীতে ছিল, অধিকাংশই বেশ মজার আর নতুনত্বে ভরা।
সবমিলিয়ে বলতে পারি, 'রোল নাম্বার শুন্য' কিশোর পাঠকদের জন্য একটা আদর্শ উপন্যাস হতে পারে। অবশ্যই এই উপন্যাস তাদেরকে নতুন কোন বার্তা দিতে না পারলেও, কিছু সময়ের জন্য তাদের মনে ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে রাখতে সমর্থ হবে। তবে বড়রা সুমন্ত আসলামের নাম দেখে এই বই পড়লে অবশ্যই হতাশ হবেন। বইটাতে ছোট বড় এত খুঁত আছে যে, সেগুলো কেবল বিরক্তিরই উদ্রেক ঘটাবে।
Read More
Was this review helpful to you?
By Tasfia Promy,
01 Aug 2017
Verified Purchase
রোল নাম্বার শুন্য লেখক – সুমন্ত আসলাম প্রকাশকাল – ২০১৪ প্রকাশনী-অনন্যা মূল্য – ১৩২৳ (রকমারি) ধরণ –শিশু/কিশোর উপন্যাস/সমকালীন উপন্যাস কাহিনী- ঢাকার হলি অ্যাঞ্জেল স্কুলের ফার্স্ট বয় রাসাদ ইসরাক। ক্লাস এইট এ পড়ে, সামনে জে এস সি পরীক্ষা। কিন্তু হঠাৎ করেই একমাত্র ভাগ্নে সাতিলের কাছে চলে আসে গরমের ছুটিতে। কোন এক গোপন কাজে সাহায্য করতে।ভাগ্নে সাতিলের স্কুল পুরনো এক জমিদার বাড়ির পাশেই। সেই স্কুলেই প্রথম দিন একা একা রাসাদযায় ক্লাস করার অনুমতির জন্য। ঘুরে ফিরে সব ক্লাসে ক্লাস করার সখ তাঁর তার বেশ কিছু দুষ্টু বুদ্ধি আর বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তা শুনে স্কুল শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষকের রুমে যারা ছিলেন সবাই বেশ মুগ্ধ। ঠিক হল রাসাদ ঘুরে ঘুরে সব ক্লাসে ক্লাস করতে পারবে, কিন্তু রোল নাম্বার কি হবে তার ?? রোল নাম্বার ছাড়া তো আর ক্লাস করা যায় না, ঠিক হল রোল নাম্বার। রোল নাম্বার শুন্য।
ম্যাজিক ভালোবাসে সাদমান, মানুষকে সাহায্যে যার জুড়ি নেই, নিজের টিফিন ভাগ করে খায় অভাবী ছাত্রদের খাতা-কলম দেয়। স্কুলের ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন টমটম অরফে টমাস, ব্রেক ছাড়া গাড়ির মতন দু্রন্ত।ডিটেকটিভ জিনিসে বেশ আগ্রহী জহির, স্বল্পভাষী বলে কেউ কেউ তাকে অহংকারীও বলে থাকে।আরাফ কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকে। আর আছে পলাশ নামের খাদক। একসঙ্গে ৪-৫টা সিঙ্গারা, ৬-৭ টা সামুচা খাওয়া নস্যি ব্যপারমাত্র। এই পাঁচ জন কে ভালভাবে জানতে চাইছে রাসাদ, কিন্তু কেন? স্কুলে নতুন আসে মহসীন স্যার, নতুন অঙ্ক শিক্ষক। আগের শোয়াইব স্যার বেশ ভালো মানুষ ছিলেন, তাকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে।কিন্তু স্কুলে আসার পরপর মহসীন স্যার এর মাথা খারাপ হয়ে যায়। উনি নিজের কাধে একটা বিড়াল কে বসে থাকতে দেখেন, রাত-দিন তাকে খামচে ধরছে। রাসাদ একটা কাজ সমাধা করতে এইখানে এসেছে। বলা যায় সাতিল তাকে নিয়ে এসেছে, কি সেই কাজ?রাসাদ ক্লাস ৬,৭,৮ এই বাচ্চাগুলোর সাথে এত ভালো মত বন্ধুত্ব কেন করল??
পাঠ_প্রতিক্রিয়া – আমাদের প্রজন্মের একটা বিশাল অংশ বড় হয়েছি মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার এর বই পড়ে আর হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর নাটকগুলো দেখে। আমি ঢাকার বাইরে বড় হওয়া। ঢাকা এসে খালাতো ভাই এর বই পড়তাম, তখনই ভাইয়ার কাছে থাকা জাফর ইকবালের বই পড়া। এই ভূমিকা করার কারণ হল, বই পড়তে গিয়ে কোথাও না কোথাও ওই দুই জনের লেখা গল্প / নাটকের মিল আছে বলে আমার মনে হয়েছে। রাসাদ চরিত্রে। আবার যে পাঁচ জনের কথা বলা, এরকম চরিত্র প্রায় গল্পে দেখি জফর ইকবাল স্যার এর। যাই হোক , বেশ মিল লেগেছে, যেটা নিতান্তই আমার মত। গল্পটা বেশ সুন্দর আর সাবলীল। আসলে কিশোর বয়েস অনেকদিন আগে পার হয়ে এলেও কিশোর উপন্যাস বা গল্পের প্রতি আকর্ষন কমেনি। সুমন্ত আসলাম, সেই প্রথম আলোর ম্যগাজিন আলপিন আর ছুটির দিনে বাউন্ডুলে কলামের লেখক সুমন্ত আসলাম, বাউন্ডুলের লেখা গুলো তখন নিয়মিত ভাবেই পড়েছি। এখন তাঁর লেখা বই পড়লাম। রাসাদ এর কথা / কাজ সব ভালো লেগেছে, হোমওয়ার্ক স্কিপ করার আইডিয়াগুলো অসাধারণ ছিল।তবে আমরা প্রয়োগ করতে গেলে আমাদের কে ক্লাস রুম এর বাইরে বের করে দেয়া কিংবা হাতে স্কেলের বাড়ি খাওয়া লাগত বোধহয়। আমার মনে হয় এই রকম গল্প যদি বাচ্চারা আরো পড়ে এমনকি বড়রা, সাতিল আর রাসাদ যে কাজ করতে চাচ্ছে সেরকম কাজে সফল হত। আসলেই আমরা যান্ত্রিক হয়ে পড়ছি বড্ড বেশি। রেটিং- ৫/৫
Read More
Was this review helpful to you?
By Rean Sharker,
24 Sep 2019
Verified Purchase
সময় তাদের জন্য ধীর, যারা অপেক্ষা করে। যারা ভয় করে, তাদের জন্য খুব দ্রুত। তাদের জন্য খুব দীর্ঘ, যারা শোক করে। যারা আনন্দ করে, তাদের জন্য ক্ষুদ্র। কিন্তু যারা ভালোবাসে, তাদের জন্য সময় অমর। (হেনরি ভ্যান ডাইক) . রিডিং... রোল নাম্বার শূণ্য - সুমন্ত আসলাম.... ? . রোল নাম্বার শূণ্য কি অদ্ভুত একটা নাম। রোল নাম্বার শূণ্য আবার হয় কি করে? নাম শুনেই বইটি পড়তে ইচ্ছে করে কিন্তু আমি বইটি নামের জন্য পড়িনি পড়েছি লেখকের জন্য। এর আগে তার লেখা ২টি বই পড়েছিলাম। খুবই ভালো লেগে যায় বই দুটি তাই এই বইটি পড়া। আমার মনে হয় হুমায়ূন আহমেদের পরে সুমন্ত আসলাম কে রাখা যায়।
গল্পটা শুরু হয় রাসাদ কে দিয়ে। রাসাদ স্কুলে হেড স্যারের রুমে গিয়ে জানায় সে এই স্কুলে পড়তে চায় কিন্তু কোন নির্দিষ্ট ক্লাসে না। যখন যেই ক্লাসে বসতে ইচ্ছে করবে সেই ক্লাসে বসবে। তার রোল থাকবে শূণ্য। তাকে তখন কিছু প্রশ্ন করা হয় রাসাদ সব গুলোর উত্তদের এবং কিছু সূত্র দেয় যে গুলো হয়ত নিউটন বেঁচে থাকলে আবিষ্কার করতো। একটা সূত্র তুলে ধরলামঃ- কাজের সূত্র “কাজ করতে করতে যখন দুই হাত কালিঝুলিতে ভরে যাবে, ঠিক তখনি নাকের ডগাটা চুলকাতে থাকবে আপনার।” এরকম আরো মজার মজার সূত্র দেয় রাসাদ। স্কুল কমিটি থাকে স্কুলে থাকার উনুমতি দিয়ে দেয়।
এরপর আমরা দেখতে পাই ক্লাস সিক্সে পড়ুয়া সাতিল এর মামা হয় রাসাদ। স্কুলের কিছু একটা সমস্যা চলছে সমস্যা সমাধের জন্যই সাতিল তার মামাকে দিয়ে আসে। কিন্তু সমস্যাটা কি? সেটা জানার জন্য আপনাকে যেতে হবে শেষের দিকে। লেখক বইতে এই একটাই টুইস্ট রেখেছেন। যাইহোক দেখা গেল খুব অল্প সময়েই রাসাদ স্কুলের সবার প্রিয় হয়ে গেল। সে সব ক্লাসের একবার করে যাচ্ছে যেখানে ম্যাজিক দেখিয়ে, আড্ডা দিয়ে সবার প্রিয় হয়ে যাচ্ছে সে। আমার মনে হয় একজন শিক্ষক ছাত্র দের কাছে কি করে প্রিয় হতে পারেন তা কিছুটাই হলে শিখতে পারবেন তিনি এই বই থেকে। রাসাদ হোমওয়ার্ক না করে গেলে কি করতে হবে এমন কয়েকটি টিপস্ দিয়েছিল ক্লাস ৬ এ ছেলেদের। তেমনই একটি টিপস্ তুলে দিলামঃ- “স্যার হোমওয়ার্ক তো আমি ঠিকই করেছিলাম। কিন্তু হোমওয়ার্কের খাতাটি টেবিলে রেখে বাথরুমে গিয়েছিলাম আমি। বাথরুমে থেকে বের হয়ে দেখি, আমার ছোট বোন খাতা থেকে ওই হোমওয়ার্কের পাতা ছিঁড়ে কুচিকুচি করে পানিতে ভিজিয়ে তার পুতুলকে খাওয়াচ্ছে।”
স্কুলের সবার প্রিয় অঙ্ক স্যারকে বলদি করা না হয় তা নিয়ে সবাই একটা পরিকল্পনা করে। নতুন আসা অঙ্ক স্যার ঠিক করেছিল সবাইকে ইন্টাভিউ নিবে। ছাত্র নতুন অঙ্ক স্যারে প্রশ্নের এমন মজার সব উত্তর দিলে যে। নতুন স্যার স্কুল থেকে পালালো। যাওয়ার সময় স্যার অর্ধেক পাগল হয়ে গিয়েছিল। কি এমন করেছিল ছাত্ররা?
প্রচুর বিনোদন, ইমুশনাল,ভালোবাসা, বন্ধুত্ব, শেখার মতো অনেক কিছু মিলিয়ে কিশোরদের জন্য বই বইটি হতে পারে অসাধারণ কিছু। বইটি কিনুন, গন্ধ নিন, এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করুন। পড়া শেষে ভাবতে থাকুন কি পড়লেন, কি লিখলেন? লেখক কে কি হুমায়ূন আহমেদের পর রাখা যায়?
. ভিন্ন ধরণের আঙ্গিক গঠনে রচিত উপন্যাস "রোল নাম্বার শূন্য"। সাধারণত কিশোর উপন্যাসগুলোতে দেখা যায়, কয়েকটা কিশোরের জীবন বেশ ভালোভাবেই কাটছে। হঠাৎ হয়ত তারা কোন একটা সমস্যায় পড়ল। তার সমাধান বের করাকেই ঘিরে আবর্তিত হয় কাহিনী। কিন্তু "রোল নাম্বার শূন্য"সেদিক থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কাহিনীর শুরুই হয়েছে কোন এক অজানা সমস্যা দিয়ে। সেই সমস্যার কথা অবশ্য প্রথমেই প্রকাশ করেন না লেখক। . রাসাদ এই উপন্যাস এর প্রধান চরিত্র, সবেমাত্র ক্লাস সেভেনের গন্ডি পেরিয়েছে। তবে ছোট হলেও তার বুদ্ধি কিন্ত অনেক।সাতিল নামে তার এক ভাগ্নে আছে।ক্লাস সিক্সে পাঠরত সাতিল কোন এক বিশাল সমস্যায় পড়ে, যার সমাধান করতে না পারলে বিপদে সে শুধু একা নয়, পড়বে তার স্কুলের সবাই। সব ক্লাসের সব ছেলেরাই। নিরুপায় হয়ে সেই বিশেষ সমস্যাটার সমাধান করতে সে ডেকে আনে তার ছোটমামা রাসাদকে। . সমস্যার সমাধান করতে রাসাদ সাতিলের স্কুলে ভর্তি হতে চায় কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাড়ান স্কুলের হেডমাস্টার।রাসাদ তার চমৎকার কথায় ভুলিয়ে শেষ পর্যন্ত ভর্তি হয় স্কুলে। অত্যন্ত বুদ্ধিমান রাসাদ সাতিলদের স্কুলের হেডস্যারের সাথে কথা বলে এমন ব্যবস্থা করে নেয় যাতে সে কয়েকটা দিন ঐ স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীতে ক্লাস করতে পারে রোল নাম্বার শুন্য হিসেবে। এভাবেই শুরু হয় রোল নাম্বার শূন্যের কাহিনী। রাসাদ যে সমস্যাটির সমাধান করতে এখানে এসেছে তা তাকে করতে হবে গোপনে। কেউ টের পেলে তার ভাগ্নে সাতিলসহ স্কুলের ও ক্ষতি হবে।কি সমস্যার সমাধান করতে রাসাদকে শূণ্য রোল নাম্বারে উপস্থিত হতে হল? তার সমাধান কাউকে না জানিয়ে গোপনে কেন করতে হবে তা জানতে হলে পড়েনি বইখানা।
. #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ সুমন্ত আসলামের সব গল্পই একটা অদ্ভুত ধরনের সরলতা থাকে। রোল নামবার শূন্যতে ও ব্যতিক্রম ছিলনা।সব মিলায়ে বইটা ভাল লেগেছে।পড়ে দেখতে পারেন আশে করি ভাল লাগবে। হাপি রিডিং....