বিশ্বগল্প সাতটি গল্পের অনুবাদ সংকলন। এখানে বিশ্বসাহিত্য থেকে অর্থাৎ বিভিন্ন ভাষায় লেখা ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইংরেজিতে অনূদিত) গল্প বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। গল্পগুলো বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির বলেই প্রতিটি গল্প আলাদা গঠন ও মেজাজ পরিগ্রহ করেছে। পাশাপাশি গল্প বাছাইয়ে সময় নির্ধারণে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য প্রতিটি গল্প আলাদা আলাদা সময়কে ধারণ করেছে। অধিকন্তু গল্পের ধরন (জাঁর) একই রকম নয় বলে পাঠক এক মলাটে ভিন্ন ধাঁচের গল্প পাঠের সুযোগ পাবেন, পাবেন ভিন্ন ভিন্ন সময় ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়ার সমূহ সুযোগ।
অ্যান্তন চেখভ-এর “একজন সরকারি কেরানির প্রয়াণ” গল্পে শ্রেণিবৈষম্য ফুটে উঠেছে দারুণ আবেগে। ফ্রাঙ্ক ও’কনর-এর “আমার ঈদিপাস কমপ্লেক্স” গল্পে বাবা-ছেলে এবং মা-ছেলের সম্পর্কের রসায়ন নিয়ে বাস্তব উপাখ্যান বিধৃত হয়েছে। অস্কার ওয়াইল্ড-এর “বুলবুল পাখি ও গোলাপ ফুল” এমনকি এসময়ের তরুণ প্রজন্মের জন্যও অবশ্যপাঠ্য। অলীক কিছুর পিছে না ছুটে বরং বাস্তববাদী হওয়ার মন্ত্র আছে এ গল্পে। লাসলো ক্রাসনাহোরকাই-এর গল্প “বাইরে কিছু একটা জ্বলছে” যুদ্ধ নিয়ে একটি মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেছে। “ঘটনপটীয়সী হৃদপিণ্ড” গল্পটিতে এডগার এলান পো তাঁর স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে রূপকের মাধ্যমে একটা হরর পরিস্থিতির মোড়কে মানুষের বিশ্বজনীন মানসিক অবস্থা বিধৃত করেছেন। মেটাফিকশন “বিশাল ডানাওয়ালা এক অশিতীপর বৃদ্ধ” গল্পটিতে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ ম্যাজিক রিয়্যালিজম ন্যারেটিভ ব্যবহার করে (অতিপ্রাকৃতিক বিষয়ের মাধ্যমে) মানুষের স্বার্থপরতার গল্প শুনিয়েছেন। সবশেষ গল্প, “বসন্তের হৃদয়” একজন বয়স্ক ব্যক্তির সাথে তারই সাহচর্য ও স্নেহে বেড়ে ওঠা এক তরুণের মধ্যকার সম্পর্কেও রসায়ন মনস্তাত্বিক আবহে তুলে ধরেছেন উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস।