কবির কলমে ভালোবাসার প্রসব প্রতিটি কবিতা। মানুষের দৈনন্দিন জীবনধারা, আবেগ অনুভূতি কাব্যিক ভাষায় প্রকাশ করাকে কবিতা বলে। কবিতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে ছন্দ-প্রকরণ, অলংকার কিংবা ব্যাকরণ পাঠের চেয়ে বেশি প্রয়োজন অনুভুতির সুক্ষ্ম ধারণা। প্রথমত সৃষ্টি হয় কাব্য অতঃপর সেটিকে বিশ্লেষণ করার জন্য প্রয়োজন পড়ে ছন্দ। কাব্য আহমেদ হৃদয় “অপ্রেমিকা” কাব্যগ্রন্থে জীবন্ত অনুভুতি বিশ্লেষণ করেছেন।
কাব্যগ্রন্থটির অধিকাংশ কবিতা গদ্য ছন্দে রচিত; অনুভূতির চুল চেরা বিশ্লেষণ। আমি যখন শীতের রাতে বসে কাব্যগ্রন্থটির পান্ডুলিপি দেখছিলাম; প্রতিটা শব্দ আমাকে শিহরিত করেছে। বারবার মনে হচ্ছিল, কবি যেন আমার মনের গোপন অনুভুতিই তুলে ধরেছেন। কিছু কিছু কবিতা পড়ে আমি এতটাই আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি যে, কবিকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করেছে, “হে প্রিয় কবিবর, কে সেই অপ্রেমিকা? যার ভাবনা আপনাকে আকুল করেছে; সেই সৌভাগ্যবতী প্রতীক্ষীত অপ্রেমিকাকে দর্শনের ইচ্ছে জাগে। “পরবর্তী কিছু কবিতা পড়ে ধারণা বদলে যায়; কবি শুধু মাত্র প্রেমিকই নন, তিনি তো বিদ্রোহী। বিদ্রোহী কবি উচ্চারণ করেন অমর বাণী; প্রেম সত্য, প্রেম আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। কাব্যগ্রন্থটিকে শুধুমাত্র রোমান্টিক উপাধিতে আখ্যায়িত করলে চরম ভুল বলা হবে। অপ্রেমিকাকে ঘিরে ব্যাকুলতা, বর্তমান সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, বিদ্রোহী মনোভাব, চিন্তা চেতনার নানা অসঙ্গতি প্রভৃতি স্থান করে নিয়েছে প্রতিটি কবিতায়।
বর্তমানে আবেগপ্রবণ তরুণ সমাজের জন্য কাব্যগ্রন্থটি ঔষধ স্বরূপ। কাব্যগ্রন্থটির একটি বিশেষ দিক উল্লেখ করতে চাই, যেটি আমাকে মুগ্ধ করেছে; কবি রমণীকে জননী বলে সম্বোধন করেছেন। নারী জাতিকে জননী সম্বোধনে কবি নারী সমাজকে উচ্চ সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কাব্যগ্রন্থটির অনুভুতিগুলো এতোটাই প্রখর যা বিশ্লেষণ করতে আমি অক্ষম। আমার নিজস্ব অনুধাবন থেকে কিছুটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বাকিটা সুযোগ্য পাঠকবৃন্দ নিজেরাই যাচাই করে নিবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।