“পথের পাঁচালী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ত্রিশােত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একেবারেই দলছুট ও স্বতন্ত্র। পথের পাঁচালী তাঁর প্রথম উপন্যাস। সাহিত্যপত্রি... See more
TK. 300 TK. 258 You Save TK. 42 (14%)
দুঃখিত, বইটি বর্তমানে আমাদের ও প্রকাশনীর স্টকে নেই, নতুন স্টক এলে পুনরায় অর্ডার নেওয়া হবে। রিস্টক নোটিফিকেশন পেতে Request for Reprint বাটন ক্লিক করুন
“পথের পাঁচালী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ত্রিশােত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একেবারেই দলছুট ও স্বতন্ত্র। পথের পাঁচালী তাঁর প্রথম উপন্যাস। সাহিত্যপত্রিকা বিচিত্রায় এটি প্রথম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয় (আষাঢ় ১৩৩৫ থেকে আশ্বিন ১৩৩৬) । গ্রন্থাকারে প্রকাশের পূর্বে বিচিত্রায় প্রদত্ত বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। ..প্রকৃতির স্বাধীন আবহাওয়া একটি শিশু-চিত্তকে কিভাবে ধীরে ধীরে সংসার-সংগ্রামের উপযােগী করিয়া তুলিতেছে তাহারই বিচিত্র ইতিহাস অপরূপ ভঙ্গিতে। বলা হইয়াছে। শিশু-মনের দুৰ্জ্জেয় রহস্য ইতিপূর্বে আর কেহ এদেশে এরূপ ভাবে উদঘাটিত করেন নাই; অন্য দেশেও কেহ করিয়াছেন কিনা আমাদের জানা নাই। রবীন্দ্রনাথের মতে, “বইখানা দাড়িয়ে আছে আপন। সত্যের জোরে। এর থেকে শিক্ষা হয়নি কিছুই। দেখা হয়েছে অনেক যা পূর্বে এমন করে দেখিনি। বাংলা সাহিত্যের বুদ্ধিবাদী ব্যক্তিত্ব ধূর্জটিপ্রসাদ মুখােপাধ্যায় এ-উপন্যাস প্রসঙ্গে আবেগােচ্ছাস গােপন করেই বলেছেন- ‘বইখানি আমি অন্তত দুবার পড়লাম। এখনাে আমার মতামত সংযত করতে পারলুম না।...এমন ভাষা, এমন গাম্ভীর্য, এমন nature study, এমন সূক্ষ্মদৃষ্টি, এমন চরিত্রাংশ, এমন পবিত্রতা আমাদের সাহিত্যে দুর্লভ। হয়তাে এসব কারণেই বিচিত্রায় প্রকাশকালে এর গ্রাহক-পাঠকেরা কোনােরকম দ্বিধা না রেখেই বলেছেন- পথের পাচালী শেষ হয়ে গেলে তারা আর বিচিত্রা পড়বেন না । যুগবাঞ্ছিত কোনাে প্রতিকার-প্রতিরােধের বয়ান-বিবৃতি নয় পথের পাচালী; তবু সমকালীন রসগ্রাহী বাঙালি পাঠক এর মধ্যে প্রত্যক্ষ করেছেন আত্মপ্রতিকৃতি, অনুভব করেছেন আত্মীয়তার আস্বাদ। অপু নামক এক গরিব-ঘরের ছেলে কীভাবে নানা প্রতিকূল পথ ডিঙিয়ে জীবনামৃত আস্বাদন করে চলেছে, জীবনপথের বিচিত্র প্রতিবন্ধকতা যে তার উত্তরণে বাধা হয়ে ওঠেনি তারই অসাধারণ বাণীরূপ এটি। মূলত অন্তর্লোকে সদিচ্ছা। থাকলে কোনাে মানবপুত্রের জীবনান্বেষা যে ব্যর্থ হয়। বরং সে হয়ে উঠতে পারে অমৃতলােকের অভিযাত্রিক তা এ-উপন্যাসে অপরূপ কথামালায় বিন্যস্ত করেছেন ঔপন্যাসিক। এই অসাধারণ আখ্যানের কারণেই পথের পাঁচালী বাংলা কথাসাহিত্যের ভুবনে একক ও অদ্বিতীয়। এর দ্বিতীয় তুলনা যথার্থই বিরল।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কিছু কালজয়ী উপন্যাস রচনার মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের হৃদয়। শুধু উপন্যাসই নয়, এর পাশাপাশি তিনি রচনা করেছেন বিভিন্ন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, দিনলিপি ইত্যাদি। প্রখ্যাত এই সাহিত্যিক ১৮৯৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, তবে তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল যশোর জেলায়। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর প্রথম বিভাগে এনট্রান্স ও আইএ পাশ করার মাধ্যমে। এমনকি তিনি কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ডিস্টিংশনসহ বিএ পাশ করেন। সাহিত্য রচনার পাশাপশি তিনি শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন অতিবাহিত করেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই সমূহ এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো 'পথের পাঁচালী', যা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হওয়ার মাধ্যমে। এই উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় অর্জন করেছেন অশেষ সম্মাননা। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই এর মধ্যে আরো উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো 'আরণ্যক', 'অপরাজিত', 'ইছামতি', 'আদর্শ হিন্দু হোটেল', 'দেবযান' ইত্যাদি উপন্যাস, এবং 'মৌরীফুল', 'কিন্নর দল', 'মেঘমল্লার' ইত্যাদি গল্পসংকলন। ১০ খণ্ডে সমাপ্ত ‘বিভূতি রচনাবলী’ হলো বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর বই সমগ্র, যেখানে প্রায় সাড়ে ছ’হাজার পৃষ্ঠায় স্থান পেয়েছে তার যাবতীয় রচনাবলী। খ্যাতিমান এই সাহিত্যিক ১৯৫০ সালের ১ নভেম্বর বিহারের ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি মরণোত্তর 'রবীন্দ্র পুরস্কারে' ভূষিত হন।
জন্ম ১২ সেপ্টেম্বর ১৮৯৪ এবং মৃত্যু ১লা নভেম্বর ১৯৫০। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। পথের পাঁচালী ও অপরাজিত তার সবচেয়ে বেশি পরিচিত উপন্যাস। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আরণ্যক, আদর্শ হিন্দু হোটেল, ইছামতী ও অশনি সংকেত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। উপন্যাসের পাশাপাশি বিভূতিভূষণ প্রায় ২০টি গল্পগ্রন্থ, কয়েকটি কিশোরপাঠ্য উপন্যাস ও কয়েকটি ভ্রমণকাহিনী এবং দিনলিপিও রচনা করেন। তার রচিত অসংখ্য উপন্যাস,গল্প,ভ্রমন কাহিনী, কিশোর পাঠ্য এবং বিবিধ রচনা বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য স্হান দখল করে আছে।
পথের পাঁচালী (১৯২৯):
প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলার গ্রামে দুই ভাইবোন অপু আর দুর্গার বেড়ে ওঠা নিয়ে এই উপন্যাস। এই উপন্যাসের ছোটদের জন্য সংস্করনটির নাম আম আঁটির ভেঁপু। পরবর্তী কালে বিখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসটি অবলম্বনে পথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র) নির্মান করেন যা দর্শকদের কাছে ব্যাপক সাড়া পায়।
সমগ্র উপন্যাসটি তিনটি খণ্ড ও মোট পঁয়ত্রিশটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। খণ্ড তিনটি যথাক্রমে বল্লালী বালাই (পরিচ্ছেদ ১-৬; ইন্দির ঠাকরূনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে), আম-আঁটির ভেঁপু (পরিচ্ছেদ ৭-২৯; অপু-দুর্গার একসাথে বেড়ে ওঠা, চঞ্চল শৈশব, দুর্গার মৃত্যু, অপুর সপরিবারে কাশীযাত্রা চিত্রিত হয়েছে) এবং অক্রূর সংবাদ (পরিচ্ছেদ ৩০-৩৫; অপুদের কাশীজীবন, হরিহরের মৃত্যু, সর্বজয়ার কাজের জন্য কাশীত্যাগ এবং পরিশেষে নিশ্চিন্দিপুরে ফিরে আসার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে) ।
বল্লালী বালাই:
একজন নারীর কিরকম অনুভূতি হয় যখন সে ক্রমাগতভাবে নির্যাতিত হয়, কারণ তার কোন আয়ের উৎস নেই? যখন একজন নারী তার জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে আসে, তখন তার সামাজিক পরিস্থিতি কেমন হয়? যখন কোন নারী অল্পবয়সে স্বামীহারা হয় এবং সমাজ তাকে আবার বিয়ে করবার অনুমতি দেয় না তখন সেই নারীর সামাজিক অবস্থান কোথায় দাঁড়ায়? এই সব প্রশ্নের উত্তর বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী বইয়ে রয়েছে। এই উপন্যাসের প্রথম অংশে আমরা তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার অন্যতম ত্রুটি বাল্যবিবাহ ও যৌতুককে প্রকট আকার ধারণ করতে দেখি।
নিশ্চিন্দিপুর গ্রামকে কেন্দ্র করে এ উপন্যাসের প্রেক্ষাপট। গ্রামের মেয়ে ইন্দিরঠাকুরনের বিয়ে অল্পবয়সে এমনই এক লোকের সাথে লোকের সাথে দেয়া হয়, যে বেশি যৌতুকের লোভে অন্যত্র বিয়ে করেন এবং আর কখনও ফিরে আসে না। তখন আয়হীন ইন্দিরঠাকুরনের স্থান হয় তার বাবার বাড়িতে এবং তাদের ও তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার দূরসম্পর্কের আত্মীয় হরিহরের বাড়িই তার স্থান হয়। সেখানে প্রতিমুহূর্তে তাকে মনে করিয়ে দেয়া হত যে সে একজন আশ্রিতা ছাড়া আর কেউ নয়। সে প্রায়শই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত, কিন্তু দিনশেষে তার পথ এসে শেষ হত হরিহরের বাড়িতেই। একবার ঘটনাক্রমে বাড়ি থেকে তাকে একেবারে বের করে দেয়া হয় এবং মর্মান্তিকভাবে তার জীবনের ইতি ঘটে।
আম-আঁটির ভেঁপু:
এই উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশ ‘আম আঁটির ভেঁপু’। হরিহর আর সর্বজয়ার দুই সন্তান মেয়ে দূর্গা ও ছোট ছেলে। এই চারটি প্রধান চরিত্রকে কেন্দ্র করেই উপন্যাসের এ অংশের বিকাশ। গ্রামের অবারিত পরিবেশে বেড়ে ওঠা অপু দূর্গা দুই ভাইবোন একে অপরেরর প্রতি অন্তপ্রান। তাদের বাবা বংশে কুলীন ব্রাহ্মণ হলেও তাহারা অর্থ অভাবে কোন মতে দিনগুজরান করেন। মা সর্বজয়া সন্তানদের মুখে ভালো খাবার তুলে দিতে পারেন না বলে মরমে ব্যাথিত থাকেন।দুই ভাইবোন বনেবাদাড়ে ঘুরে বেতফল, পানিফল,অপরিপক্ক আমের গুটি, কুল, বুচিফল ইত্যাদি খেয়ে মহাতৃপ্ত হয়।জীবনে এরা কোন ভাল খাবার খায়নি।
রেলগাড়ির রাস্তা দেখার জন্য তারা অনেক দূর চলেযায় কাউকে না বলে। অভাবের জন্য স্বাভাবিক ভাবেই কিশোরী দূর্গার ছিল কিছুটা হাতটান স্বভাব।এজন্য পাড়ার জেঠিমা এসে কয়েক বার দূর্গা ও তার মাকে অপদস্থ করে যায়। তাদের বাবা ভাগ্যের সন্ধানে নানান জায়গায় ঘুরে বেড়ায়।বাড়িতে সংসার চালানোর মত টাকা না থাকায় সর্বজয়া ঘটিবাটি বিক্রি করে খেয়ে না খেয়ে দিনপাত করে।অপুর পড়ার আগ্রহ থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনা দরিদ্রের কষাঘাতে। বহুদিন ম্যালেরিয়ায় ভুগে দূর্গা শয্যাশায়ী।এমন দূর্দিনে নেমে আসে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। বৃষ্টি-বন্যা-ঝড়। প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায় দূর্গা নামের সদাচঞ্চল কিশোরী। অপু হয়ে পড়ে সাথীহারা প্রানহীন বালক।
অক্রুর সংবাদ:
সন্তান হারানো হরিহর আর সর্বজয়ার কিছুতেই আর মন টেকেনা এ গায়ে। হরিহর সব কিছু পানির দামে বেচে দিয়ে গায়ের পাঠ চুকিয়ে কাশী চলে যান পরিবার নিয়ে। সেখানে নতুন সংসার প্রথমে ভালোই চলছিল কিছুদিন। স্বাচ্ছন্দ্যের স্বাদ পেতে না পেতেই হরিহর নিউমোনিয়া বাধিয়ে বসেন।কিছুদিন শয্যাশায়ী থেকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
বিদেশ বিভূইয়ে বালকপুত্র অপুকে নিয়ে তার মা অথই পাথারে পড়লেন। কোন উপায় না পেয়ে এক ধনী গৃহস্থের বাড়িতে রাধুনীর চাকুরি নেন সর্বজয়া। সেখানে না আছে স্বাধীনতা না আছে সন্মান।রাধুনির ছেলে হয়ে বাড়ির ছেলেদের সাথে মেশার অপরাধে অপুকে মার খেতে হয়।সর্বজয়া কষ্টে চুরমার হতে থাকে ভিতরে ভিতরে। মনে পড়ে অতীতের পুরানো দিনের কথা। মনে পড়ে সেই নিশ্চিন্দিপুর গ্রাম। অপু একদিন বড়হয়ে আয় রোজগার করবে, তাদের কষ্টের দিন পাল্টে যাবে এমনি স্বপ্নে নিজেকে বিভোর রেখে আত্মপ্রসাদ পেতে চান অপুর মা সর্বজয়া।
সর্বজয়ার চোখের অশ্রু মোছার জন্যও কেউ ছিল না। সবাই তার কষ্টের সুযোগ নিতে চায়। সাহায্যের হাত কেউ বাড়ায় না। অবশেষে সে অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ছেলে অপুকে নিয়ে তার নিজ গ্রাম নিশ্চিন্দিপুরের পথে রওনা হয়। কিন্তু সে তার সঠিক পথ খুঁজে পায় না। কিন্তু বলাই বাহুল্য যে এই সামাজিক বৈষম্য আজকের একবিংশ শতাব্দিতে এই উন্নত সমাজেও পরিলক্ষিত হয়। বস্তুত এই উপন্যাস আদি ও বর্তমান সামাজিক উথ্থান পতন ও সামাজিক কুসংস্কারের প্রতিচ্ছবি।
মন্তব্য:
পথের পাঁচালী কালজয়ী অমর সৃষ্টি। উপন্যাসের আড়ালে এটি লেখকের আত্মজীবনী বলে অনেক সাহিত্য সমালোচকের ধারণা। কিশোর অপু আর দূর্গা পাঠকের হৃদয়ে বেঁচে থাকবে চিরকাল।
Read More
Was this review helpful to you?
By Abhishek Das Gupta,
23 Oct 2019
Verified Purchase
পথের পাঁচালী হলো প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত একটি বিখ্যাত উপন্যাস। বাংলার গ্রামে দুই ভাইবোন অপু আর দুর্গার বেড়ে ওঠা নিয়েই বিখ্যাত এই উপন্যাস।সমগ্র উপন্যাসটি তিনটি খণ্ড ও মোট পঁয়ত্রিশটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। খণ্ড তিনটি যথাক্রমে বল্লালী বালাই (এখানে ইন্দির ঠাকরূনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে), আম-আঁটির ভেঁপু (এখানে অপু-দুর্গার একসাথে বেড়ে ওঠা, চঞ্চল শৈশব, দুর্গার মৃত্যু, অপুর সপরিবারে কাশীযাত্রার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে) এবং অক্রূর সংবাদ।এই খন্ডে অপুদের কাশীজীবন, হরিহরের মৃত্যু, সর্বজয়ার কাজের জন্য কাশীত্যাগ এবং পরিশেষে নিশ্চিন্দিপুরে ফিরে আসার কাহিনী বর্ণিত হয়েছে।বইটিতে পাঠের মাধ্যমে একজন পাঠক প্রাচীনকালের সমাজ ব্যবস্থা,পল্লী প্রকৃতি,সামাজিক ত্রুটি যেমন: বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রথা,স্বামীহারা নারীদের জীবন সংগ্রাম,গ্রামের মানুষের সরলতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবে।বইটি অামাদের অাবার শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।বইটি পড়ে আমি অনেক সচেতন হয়েছি এবং অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর জন্য আরেকটু অনুপ্রেরণা পেয়েছি ।খুবই চমৎকার ছিলো উপন্যাসটি। পরবর্তী কালে বিখ্যাত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসটি অবলম্বনে পথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র) নির্মান করেন যা দর্শকদের কাছে ব্যাপক সাড়া পায়। তাই পাঠক দেরি না করে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা এই উপন্যাসটি এখনোই পড়ে ফেলুন।