কর্তেনয়ো

কর্তেনয়ো (হার্ডকভার)

বইটি বিদেশি প্রকাশনী বা সাপ্লাইয়ারের নিকট থেকে সংগ্রহ করে আনতে আমাদের ৩০ থেকে ৪০ কর্মদিবস সময় লেগে যেতে পারে।

west-bengal-book

এই ই-বুক গুলোও দেখতে পারেন

বইটই

বইটির বিস্তারিত দেখুন

বৈশাখী বিকেলের ফিনফিনে বাতাস বয়ে আসছে নদীর উপর দিয়ে। খড়ে নদীর জলে হোলি রঙ। কুসুমসূর্য এক পা এক পা পিছনে হাঁটছে বাহাদুরপুর জঙ্গলের দিকে। আকাশে ছড়িয়ে আছে চওড়া ব্রাশে টানা রঙের আঁচড়। একটি রঙের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে আরেকটা রঙ। এ যেন রঙের সঙ্গে রঙের লুকোচুরি খেলা। নদীও যেন আকশের সঙ্গে খুনসুটি করছে। তার জলও পাল্টে ফেলছে নিজেকে। কখনও শান্ত। কখনও মিহি বাতাসের দোলায় তৈরি হচ্ছে আলপনা। আকাশের রঙের প্যালেট থেকে রঙ তুলে নিয়ে মিশিয়ে দিচ্ছে জলের শরীরে।
আকাশ আর নদীর খেলার মাঝেই নদীর পাড়ে বসে বয়ে আসা বাতাস বুকে ভরে নিচ্ছে সে। তার ফর্সা দোহারা চেহারা। শরীরটা প্রকৃতির আলোয় কাঞ্চনবর্ণ। বুক ভরে বাতাস টেনে নেয় বুকে। আহ্‌, কী প্রশান্তি! সমগ্র শরীর শীতল হয়ে যায়। মাথায় হালকা হয়ে আসা চুলে ঢেউ খেলছে বাতাস। সে দু হাত সামনের দিকে তুলে ধরে। বর্ণিল আকাশের দিকে চেয়ে থাকে। অস্ফুটে বলে, প্রভু তুমি কী অসীম দয়াময়! আমাকে অনন্ত সুন্দরের মধ্যে দাঁড় করিয়েছো। এই বাতাস আর রঙের মধ্যে দিয়েই আমাকে স্পর্শ করেছ প্রভু। তোমার এই অনন্ত দান আমাকে ভরিয়ে দিয়েছে। ধন্য, প্রভু ধন্য তোমার নাম।
দু হাত নামিয়ে বুকের উপর রাখল সে। বুকে টেনে নিল বাতাস। হাপড়ের মতো ওঠানামা শুরু করল বুকের ফুসফুস দুটো। কয়েক মিনিট। একদম স্থির হয়ে গেল। উঠে দাঁড়াল সে। আকাশের দিকে তাকালো আবার, হলুদ আর লালের মাঝে কালোর আস্তরণ পড়েছে। নদীর দিকে তাকালো, জলের উপর ছড়িয়েছে কালচে রঙ। ছোটো ছোটো পাতলা ঢেউগুলো কখনো কখনো রুপো মাথায় নিয়ে ডুব দিচ্ছে। সে দেখল প্রকৃতির উপর কে যেন নীল কালো কালি ঢেলে দিয়েছে। দিগন্ত বিস্তৃত এই চরাচরে নদীকে সামনে রেখে সে সিল্যুট হয়ে গেল। দূরে বাহাদুরপুর ফরেস্ট চোখের আড়াল হয়ে অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। সে আবার শ্বাস টানলো। শ্বাস ছাড়লো। বুকের উপর হাত দুটো জোড় করে মৃদু উচ্চারণ করল, ‘আমি রাফায়েল, তোমার স্তব করি, বন্দনা করি তোমায়। আমাকে শক্তি দাও, কণ্ঠে সুর দাও, যেন যতদিন জীবিত আছি, তোমারই গান গেয়ে যেতে পারি।’ দু হাত কপালে ঠেকিয়ে প্রণাম করে তার অদৃশ্য ঈশ্বরের দিকে। তারপর পিছন ফিরে হাঁটতে শুরু করে। নদীর পাড় ভেঙে ওপরে রাস্তায় উঠতে থাকে। নদী এখন অনেক রোগা হয়ে গেছে, ক্ষীণতোয়া, পাড় থেকে ওপরে রাস্তায় আসতে যেন পাহাড়ে উঠতে হয়। অথচ একদিন, ছোটবেলায় পাড়ে দাঁড়াতেই নদীকে ছোঁয়া যেত। দু-পা এগোলেই নদীর জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে পারত। এখন আর সে উপায় নেই। নদীও তার পবিত্রতা হারিয়েছে। অপবিত্র করেছে মানুষ। তবুও রাফায়েল আসে। নদীর কাছে আসে। নদীর পাড়ে বসে তার ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলে। সুরের ভিক্ষা চায়। সেই ভিক্ষাঞ্জলি নিয়ে সে পথ হাঁটে, যে পথ তাকে বাড়ির চৌহদ্দিতে পৌঁছে দেয়।
মাথা তুলে আকাশ দেখল রাফয়েল। কালো চাদারের উপর দু-চারটে চুমকি জ্বলজ্বল করছে, নাকি কালো মেঝের উপর হলুদ গাঁদা ফুল ছড়ানো। বোঝে না সে, শুধু অনুভব করে সারাদিন বুকের ভিতর বিষফোঁড়ার মতো যে বিষণ্ণতা গজিয়ে উঠেছিল, সেটি এখন আর নেই। একটা আনন্দ বয়ে চলেছে তির তির করে। এই অনুভব সুর হয়ে ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। গুণ গুণ করে গাইতে থাকে―
অপূর্ব প্রেমে প্রভু এ জগৎ মাতালে
(যিশু হে, ও আমার দয়াল যিশু)
তুমি প্রেম করে, নরের তরে, এভাবে আইলে।
খ্রিস্টকীর্তনের পথ ধরে বাংলা। এক উত্তরাধিকার বহনের প্রান্তিক লড়াই।
Title কর্তেনয়ো
Author
Publisher
Country ভারত
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off

Recently Viewed

cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

কর্তেনয়ো

সমরেন্দ্র মন্ডল

৳ 504 ৳504.0

Please rate this product