"ফিরে এসো ইসলামে" বইয়ের পেছনের কভারে লেখক পরিচিতি মাওলানা সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী (রহ) সেই যে ত্রিশের দশকে তাঁর পূর্বপুরুষ বালাকোটের শহীদ আমীরুল মু'মিনীন হযরত সাইয়িদ আহমদ বেরলভী (রহ)-এর অনুপম চরিত গ্রন্থ “সীরাতে সাইয়িদ আহমদ শহীদ” লিখে তারুণ্যদীপ্ত বয়সেই উর্দু সাহিত্যের আসরে নিজের একটি উল্লেখযােগ্য আসন করে নিলেন। তারপর বিগত প্রায় পৌণে এক শতাব্দী ধরে তাঁর কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখে গেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরবদীপ্ত অধ্যায়ের ইতিবৃত্ত। পাঁচ খণ্ডে রচিত 'তারিখে দাওয়াত-ই-আযীমাত’-এর ভাবানুবাদ সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস তার এমনি একটি অমূল্য গ্রন্থ। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তাঁর অবাধ গতি। “তাঁর মা-যা খাসিরা’ল-আলামু বিনহিতাতিল-মুসলিমীন”-এর বঙ্গানুবাদ মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারালাে? একখানি চিন্তাসমৃদ্ধ অনবদ্য আরবী গ্রন্থ- যার অনুবাদ পৃথিবীর বহু ভাষায় হয়েছে। নবীয়ে রহমত ছাড়াও তাঁর রচিত ‘আল-মুরতাযা’ শীর্ষক হযরত আলী (রা)-এর জীবনী গ্রন্থখানা আরবী, উর্দু ও ইংরেজী ভাষায় প্রভূত সুনাম অর্জন করেছে। শায়খুল হাদীছ হযরত যাকারিয়া (রহ), হযরত আবদুল কাদির রায়পুরী (রহ), প্রাচ্যের উপহার , প্রাচ্যের ডায়েরী, ইসলাম ও পাশ্চাত্য সভ্যতার দ্বন্দ্ব, ভারত বর্ষের মুসলমানদের ইতিহাস, ঈমান যখন জাগলাে , পুরানে চেরাগ, ফিরে এসাে ইসলামে, কুরআন অধ্যায়নের মূলনীতি, কাদিয়ানিয়াত, নূকুশে ইকবাল, হাদীছে পাকিস্তানি, আরকানে আরবা'আ, ঈমানদীপ্ত কিশাের কাহিনী, আমার আব্বা , আমার আম্মা, নয়া খুন, বিধ্বস্ত মানবতা, ইসলামী জীবন বিধান, কারওয়ানে মদীনা, সীরাতে রাসূল আকরাম (সা), বিশ্ব সভ্যতায় রাসূল আকরাম (সা), ছােটদের নবীয়ে রহমত (সা), কে সে মুসলমান, কুরআনের বাণী ও বিশ্বব্যাপী প্রভাব, ইসলামে নারীর অধিকার ও মর্যদা, দারুল উলুম দেওবন্দ ও ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সালাত ঃ গুরুত্ব ও তাৎপর্য’, ‘সিয়াম ও গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ , হজ্ব ও গুরুত্ব ও তাৎপর্য', যাকাত ও গুরুত্ব ও তাৎপর্য, নতুন পৃথিবীর জন্ম দিবস, শায়খুল হাদীছ হযরত যাকারিয়া (রহ), হযরত মুজাদ্দেদী আলফে ছানী (রহ), শাহ ওয়ালী উল্লাহ দেহলবী (রহ) শায়খুল ইসলাম হাফিজ
আল্লাহর পথের এক মহান দাঈ,ইলমে ওহীর বাতিঘর যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী। খাঁটি আরব রক্তের গর্বিত বাহক।বিশ্বময় হেদায়েতের রোশনি বিকিরণকারী।উম্মতের রাহবর ও মুরুব্বি। কল্যাণের পথে আহ্বানে চিরজাগ্রত কর্মবীর। জন্ম ১৯১৪ ঈসাব্দে। ভারতের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌর রায়বেরেলীতে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আদ্যোপান্তই দারুলউলুম নদওয়াতুল উলামায়। অধ্যাপনা জীবনের সিংহভাগও এই প্রতিষ্ঠানে নিবেদিত ছিলেন। আল্লামা নদভীর খ্যাতির সূচনা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে "সীরাতে সাইয়েদ আহমদ শহীদ" রচনার মাধ্যমে।গ্রন্থটি গোটা ভারতবর্ষে তাকে পরিচিত করে তুলে।এরপর তিনি রচনা করেন 'মা যা খাসিরাল আলামু বিনহিতাতিল মুসলিমিন' (মুসলমানদের পতনে বিশ্ব কী হারাল) নামক কালজয়ী গ্রন্থ।যা তাকে প্রথমত আরববিশ্বে ও পরবর্রতীতে বৈশ্বিক সুখ্যাতি এনে দেয়। এ পর্যন্ত গ্রন্থটির শতশত সংস্করণ বের হয়েছে। বিগত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে তার কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরদীপ্ত অধ্যায়গুলোর ইতিবৃত্ত। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তার অবাধ বিচরণ। উর্দু থেকে তার আরবী রচনায় যেন অধিকতর অনবদ্য। আল্লামা নদভী জীবনে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনি তার শ্বীকৃতিও পেয়েছেন। মুসলিম বিশ্বের নোবেল হিসেবে খ্যাত বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে দুবাইয়ে তিনি বর্ষসেরা আন্তর্জাতিক ইসলামী ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হন।১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টারের পক্ষ থেকে আলী নদভীকে সুলতান ব্রুনাই এ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। আন্তর্জাতিক বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি একাধারে রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি ছিলেন। লাখনৌর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুলউলুম নাদওয়াতুল-উলামা' এর রেকটর ও ভারতীয় মুসলনমানদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম মুসলিম পারসোন্যাল ল' বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। ইসলামের এই মহান সংস্কারক ১৯৯৯ সনের ৩১ ডিসেম্বর জুমার আগে সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াতরত অবস্থায় ইন্তিকাল করেন।