Close
  • Look inside image 1
  • Look inside image 2
  • Look inside image 3
  • Look inside image 4
  • Look inside image 5
  • Look inside image 6
পাখিগাছ ও বুড়ো কাকের গল্প image

পাখিগাছ ও বুড়ো কাকের গল্প (হার্ডকভার)

অদ্বৈত মারুত

TK. 100 Total: TK. 86
You Saved TK. 14

down-arrow
পাখিগাছ ও বুড়ো কাকের গল্প

পাখিগাছ ও বুড়ো কাকের গল্প (হার্ডকভার)

দুঃখিত, বইটি বর্তমানে আমাদের ও প্রকাশনীর স্টকে নেই, নতুন স্টক এলে পুনরায় অর্ডার নেওয়া হবে। রিস্টক নোটিফিকেশন পেতে Request for Reprint বাটন ক্লিক করুন

এই ই-বুক গুলোও দেখতে পারেন

বইটই

বইটির বিস্তারিত দেখুন

তখন দুপুর। রিতা আর রকি চোর-পুলিশ খেলছিল। একটু পরই মন দেবে অন্য খেলায়। সারাদিন ওরা কত্ত রকম খেলা খেলে-ইচিং বিচিং, এক্কাদোক্কা, ওপেন টু বায়োস্কোপ, বউচি, কানামাছি, কুতকুত, ষোলো ঘুঁটি, গোল্লাছুট, দাঁড়িয়াবান্ধা। এসব খেলা দেখে লোভ সামলাতে পারেন না দিদা। নিজের শিশুকালের কথা মনে পড়ে তার। নাতি-নাতনিদের সঙ্গে তাই ডুবে যান খেলায়। কিন্তু জোহর নামাজের আজান হওয়ায় দিদা নামাজে বসে যান আজ। এদিকে খেলতে খেলতে দিদার গায়ে এসে পড়ে রকি। রকি পুলিশ আর রিতা চোর। পুলিশ রকির ছোট্ট বেতের লাঠিটা গিয়ে পড়ে দিদার পিঠে। ঠিক ওই জায়গায়, যা ঘিরে দিদার রয়েছে অনেক কষ্টের স্মৃতি। দিদা নামাজ শেষ করে আনমনা হয়ে বসে রইলেন। চুপচাপ। রিতা এসে গায়ে পড়ায় স্মৃতিতে ভেসে উঠল ঊনিশশ একাত্তর সালের কথা। সেদিনও নামাজ শেষে বসেছিলেন জায়নামাজে। রিতা আর রকি আনমনা দিদার গা-ঘেঁষে বসে। দিদা উদাস। বলতে শুরু করেন সেদিনের কথা- ‘আজকের দুপুরের মতোই অন্যরকম ছিল ঊনিশশ একাত্তর সালের সেই দুপুরটা। স্পষ্ট মনে আছে, সেদিনও বাইরের দিকে তাকিয়েছিলাম। দেখি কত্তগুলো কাক। সফেদা গাছের ওপর ওড়াউড়ি করছে। আর কা-কা করছে। কিন্তু সেদিন তোমাদের দাদু ছিলেন বাস্তবে। আর আজ কেবলই ভাবনায়’- এতটুকু বলেই হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছতে লাগেন তিনি। রিতা আর রকি দিদাকে জড়িয়ে ধরে। দিদার ভেতর থেকে ফুঁপিয়ে কান্না আসছে। দিদা সামলে নেন নিজেকে। ছোট্টমোট্ট রিতা আর রকির সামনে এমন ছেলেমানুষী মানায় না, তাই। রিতা দিদার কাছে সেদিনের গল্প শুনতে চায়।
দিদা বলতে শুরু করেন- তোমাদের দাদু ছিলেন অনেক বড় মনের মানুষ। তিন গ্রামের মানুষ তাকে চিনত। জানত। দত্তবাড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। কত্ত ছাত্রছাত্রী তার! দেশের বড় বড় কাজ করত। ছুটিতে তারা বাড়ি এলে দেখা করে যেত তোমাদের দাদুর সঙ্গে। পা ছুঁয়ে সালাম করত। বলত- স্যার, আপনার মতো সৎ থেকে যেন দেশের জন্য কাজ করতে পারি। দোয়া করবেন। পথে-ঘাটে কেউ দেখলেই দাঁড়িয়ে সালাম করত। তোমার দাদু তার স্কুলে কখনো পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত গাইতে দিতেন না। ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ ছিল পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত। কিন্তু তোমার দাদুভাই ভাষা আন্দোলনের পর থেকে মনে করতেন- এ দেশ একদিন স্বাধীন হবে। আমরা নতুন জাতীয় সংগীত হবে। সেখানে আমাদের মা, মাটির কথা থাকবে। সেই গান হবে কেবল আমাদের। তখন দেশটা ছিল দুইভাগে। একভাগে পশ্চিম পাকিস্তান। অন্যভাগে আমরা, মানে পূর্ব পাকিস্তান। পশ্চিম পাকিস্তান শাসন করত আমাদের। শোষণ করত। বঞ্চিত করত সবকিছু থেকে। আমরা মুখ বুঁজে ওদের সব অন্যায় সহ্য করি অনেক বছর! তারপর ভোট হয়। আমরাই জিতি। কিন্তু ওরা ক্ষমতা ছাড়ে না। শেখ মুজিব, আমাদের জাতির পিতা বললেন- না, আর নয়। ওদের থেকে মুক্তি চাই। দিলেন ডাক। সেই ডাকে সাড়া দিলেন এ দেশের মুক্তিকামী মানুষ।
‘দাদুও?’- রিতা দিদার কাছে জানতে চায়। ‘হ্যাঁ, তোমাদের দাদুও’- দিদা বলেন। যুদ্ধ শুরু হলো। ২৫ মার্চ রাতে ওরা হামলা করল। অসংখ্য মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলল। ঘর থেকে তুলে নিয়ে গেল কতজনকে! শুনেছি, তাদেরও মেরে ফেলে নির্যাতন করে। তোমাদের দাদু যুদ্ধে চলে গেলেন। তখন তোমাদের বাবা আমার পেটে। আমার সঙ্গে রাতে থাকত এক মেয়ে। সারাদিন পাগল সেজে পথে ঘুরে বেড়াত। ও ছিল নারী মুক্তিযোদ্ধা। পাকিস্তানি সৈন্যদের খবর নিত। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের জানাত। পাকিস্তানিদের পক্ষেরও লোক ছিল। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের ধরিয়ে দিত। তুলে দিত পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে। ওরা গুলি করে, নির্যাতন করে মেরে ফেলত তাদের। একদিন এক রাজাকার তাকে চিনে ফেলে। তুলে দেয় পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে। তারপর আর সে ফিরে আসেনি।
রিতা, রকি চুপ হয়ে যায়। দিদার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। দিদা বলেনÑ তখন সেপ্টেম্বর মাস। দুপুরবেলা। তোমাদের দাদু বাড়িতে এসেছে। সফেদা গাছটায় তখন কাকগুলো কা-কা করছিল। একবার বাঁশবাগানে যাচ্ছিল, আবার সফেদা গাছটায় আসছিল। খুব ভয় পেয়ে যাই। বাইরে এসে দেখি, অনেক কাক। সবগুলো একসঙ্গে কা-কা করছে। এমন কান ফাটানো চিৎকার আগে কখনো শুনিনি। আল্লাহকে ডাকতে থাকি। নামাজে বসে যাই। তখনো সালাম ফেরাইনি। হঠাৎ বুট পরা পায়ের শব্দ! থপ থপ থপ থপ...
বলো কী দিদা? ওরা কারা ছিল?- রকি জানতে চায়। দিদা বলেন- ওরা সৈন্য! পাকিস্তানি! সঙ্গে রাজাকার। দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে। একজন আমার পিঠে আঘাত করে। চুলের মুঠি ধরে টেনে তোলে আরেকজন। কী রাগ! তোমাদের দাদু কোথায় আছে, জানতে চায়। খুব করে জানতে চায়। বলিনি। ওরা সব ঘর খোঁজে। পেয়েও যায় তোমাদের দাদুকে! আমার সামনেই গুলি করল। ঠ্যার‌্যা-র‌্যা-র‌্যা...!
দিদা আর কথা বলতে পারছিলেন না। কণ্ঠ আটকে আসছিল। মনে হলো, তার কণ্ঠ কেউ চেপে ধরে আছে। চোখে পানি। টপটপ করে গড়িয়ে পড়ছে। ভিজে যাচ্ছে শাড়ি। শরীরও। জানালার রেলিংয়ে বসা কাকগুলো তখনো কা-কা করছে। দিদা চোখ মুছে বাইরে তাকালেন। সফেদা গাছের পাতাগুলো কেমন জড়োসড়ো হয়ে আছে। নড়ছে না। মনে হচ্ছে, তাদেরও খুব মন খারাপ। তারাও হয়তো ভাবছে সেই মানুষটার কথা। ঊনিশশ একাত্তর সালের সেই দিনটার কথা!
Title পাখিগাছ ও বুড়ো কাকের গল্প
Author
Publisher
ISBN 9789842107580
Edition 1st Published, 2019
Number of Pages 24
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)

Customers Also Bought

loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off

Recently Viewed

cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

পাখিগাছ ও বুড়ো কাকের গল্প

অদ্বৈত মারুত

৳ 86 ৳100.0

Please rate this product