"হালাকু খান" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত চিন্তা করতে গেলে দেখা যায় মােঙ্গলদের ইতিহাস অনেকটাই জিঘাংসা আর রক্তপাতের হিংস্রতায় ধিকৃত। তাদের নেতা চেঙ্গিস, মজু, কুবলাই কিংবা হালাকু খানের তেমন কোনাে পার্থক্য নেই। সময়ের আবর্তে তারা জীবন ব্যয় করেছেন এক রণাঙ্গন থেকে অন্য রণাঙ্গনে। এক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা কিংবা দখলবাজির দিক থেকে চিন্তা করতে গেলে সবথেকে এগিয়ে রাখতে হয় হালাকু খানকে। বাবা তুলুই তথা তলুইয়ের পঞ্চম সন্তান হালাকু শৈশব থেকেই অন্য ভাইদের চেয়ে এগিয়ে থেকে জানান দিয়েছেন নিজ সক্ষমতা। অন্যদিকে তার মা সুইরকুকতেনিও ছিলেন কেরাইত নেতা ওয়াং খানের ভাই জাকেম্বাের মেয়ে। ফলে পারিবারিক দিক থেকে যােদ্ধাবৃত্তি তার ধমনীতে প্রবাহিত ছিল। প্রশাসক কিংবা সেনাদলের নেতা হিসেবে হালাকু খানের বড় সাফল্য মনে করা হয় বাগদাদ দখলকে। তবে এর ভিত্তি রচিত হয়েছিল আরও কয়েকটি সফল আক্রমণের মধ্য দিয়ে। তাদের প্রথম সফল অভিযান বলা যেতে পারে নিজারি ইসমাঈলিয়া সম্প্রদায়ের দুর্গ আলামুত দখলের ঘটনাকে। এরপর তারা বাগদাদ আর সিরিয়া দখল করে সেখানে চালায় এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। তার নির্দেশে আব্বাসীয় খলিফাকে কার্পেটে মুড়ে ঘােড়ার পায়ে পিষে হত্যা করেছিল মােঙ্গলরা। তার বাহিনী ধ্বংস করেছিল বাগদাদের বিখ্যাত লাইব্রেরি বাইতুল হিকমাহ। এরপর আইন জালুতের ময়দানে মামলুক নেতা বাইবার্সের মুখােমুখি হয়ে চরম মূল্য দেয় মােঙ্গলরা। পাশাপাশি গৃহযুদ্ধের মুখেও পড়তে হয়েছিল হালাকুকে। দ্বন্দ্ব সংঘাতে এক অস্থিতিশীল অবস্থায় এসে শেষ হয় দুর্ধর্ষ এই মােঙ্গল যােদ্ধার জীবন। তার নানা অর্জন, বিসর্জন আর সমর্পণের পাশাপাশি অন্তিম মুহুর্তের প্রায় সব ঘটনা স্বল্প পরিসরে তুলে ধরা হয়েছে এ গ্রন্থে।
Dr. Md. Adnan Arif Salim বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন স্কুলে ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। জন্ম পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীতে। লিখছেন ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সাম্প্রতিক নানা বিষয় নিয়ে।