‘আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই’ ফ্ল্যাপে লেখা কথা এক সময় আমি খুব ঘর-কুনো ধরনের ছিলাম। কোথাও যেতে ভাল লাগতো না। নিজের অতি পরিচিত জায়গা ছেড়ে দু’দিনের জন্যে বাইরে যাবার প্রয়োজন হলেও... See more
‘আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই’ ফ্ল্যাপে লেখা কথা এক সময় আমি খুব ঘর-কুনো ধরনের ছিলাম। কোথাও যেতে ভাল লাগতো না। নিজের অতি পরিচিত জায়গা ছেড়ে দু’দিনের জন্যে বাইরে যাবার প্রয়োজন হলেও গায়ে জ্বর আসতো। সেই আমাকে সাত বছরের জন্যে দেশ ছেড়ে আমেরিকা যেতে হলো সাত বছর পার করে ফিরে আসার পর পরিচিত সবাই আমার কাছ থেকে শুধু আমেরিকার গল্প শুনতে চায়্ আমি গল্প শোনাই। যাই বলি তাই দেখি সবার ভাল লাগে। শেষ পর্যন্ত ঠিক করলাম গল্পগুলি লিখে ফেলব। লেখা হলো, ‘হোটেল গ্রেভার ইন।’ দীর্ঘদিন দেশে কাটানোর পর আবার তিন মাসের জন্যে আমেরিকা গেলাম। দেখি আগের আমেরিকা বদলে গেছে। কিংবা কে জানে হয়তো আমিই বদলে গেছি। নতুন চোখে দেখা আমেরিকা নিয়ে লিখলাম, ‘মে ফ্লাওয়ার।’ তারপর মনে হলো আমার নিজের জীবনটাওতো বেশ মজার। লিখে ফেললে কেমন হয়? ভাবতে ভাবতে লিখে ফেললাম, ‘অনন্ত অম্বরে’, ‘আমার আপন আঁধার’, ‘এই আমি।’ একইভাবে লেখা হলো ‘আমার ছেলেবেলা।’ প্রায়ই আমাকে প্রশ্ন করা হয়, ব্যক্তিগত রচনা হিসেবে আমি যা লিখছি সবই কি সত্যি? প্রতিবারই এই প্রশ্নের জবাবে হ্যাঁ বলেছি, আবারো বললাম। স্কেচ ধর্মী এইসব লেখা আমার পাঠকরা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন, এই আমার জীবনের পরম পাওয়া।
সূচিপত্র * শোনা কথা * একজন অদ্ভুত বাবা * আমার মা * জোছনার ফুল * নানার বাড়ি দাদার বাড়ি * পারুল আপা * স্বপ্নলোকের চাবি * সাহিত্য বাসর * পদ্মপাতায় জল * আমার বন্ধু উনু * জগদলের দিন * শেষ পর্বে শঙ্খনদী * মে ফ্লাওয়ার * আমার আপন আধাঁর * হোটেল গ্রেভার ইন * বাংলাদেশ নাইট * প্রথম তুষারপাত * জননী * এই পরবাসে * ম্যারাথন কিস * লাস ভেগাস * শীলার জন্ম * পাখি * ক্যাম্পে * নামে কিবা আসে যায় * সমুদ্র দর্শন * কবি সাহেব * লেখালেখি খেলা * শ্বেতপদ্ম * শিল্পী সুলতান * লাউ মন্ত্র * মাসাউকি খাতাঁওরা * ইংলিশ ম্যান * হিজ মাস্টারস ভয়েজ * নুহাশ এবং সে * বটবৃক্ষ * ভাইভা * হোটেল আহমেদিয়া * এই আমি * চোখ * উৎসব * উমেশ * পেট্রিফায়েড ফরেস্ট * সে * নারিকেল মামা * পরীক্ষা * আমার বন্ধু সফিক * মিসির আলি ও অন্যান্য * বর্যাযাপন * ফ্রাংকেনস্টাইন * চান্নিপসর রাইত * লালচুল
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদ। বিংশ শতাব্দীর বাঙালি লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম স্থান দখল করে আছেন। একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার ও নাট্যকার এ মানুষটিকে বলা হয় বাংলা সায়েন্স ফিকশনের পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি বেশ সমাদৃত। বাদ যায়নি গীতিকার কিংবা চিত্রশিল্পীর পরিচয়ও। সৃজনশীলতার প্রতিটি শাখায় তাঁর সমান বিচরণ ছিল। অর্জন করেছেন সর্বোচ্চ সফলতা এবং তুমুল জনপ্রিয়তা। স্বাধীনতা পরবর্তী বাঙালি জাতিকে হুমায়ুন আহমেদ উপহার দিয়েছেন তাঁর অসামান্য বই, নাটক এবং চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রের বদৌলতে মানুষকে করেছেন হলমুখী, তৈরি করে গেছেন বিশাল পাঠকশ্রেণীও। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমনি’ দেখতে দর্শকের ঢল নামে। এছাড়া শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, ঘেটুপুত্র কমলা প্রভৃতি চলচ্চিত্র সুধীজনের প্রশংসা পেয়েছে। অনন্য কীর্তি হিসেবে আছে তাঁর নাটকগুলো। এইসব দিনরাত্র, বহুব্রীহি, আজ রবিবার, কোথাও কেউ নেই, অয়োময়ো আজও নিন্দিত দর্শকমনে। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের জনক তিনি। রচনা করেছেন নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, জোছনা ও জননীর গল্পের মতো সব মাস্টারপিস। শিশুতোষ গ্রন্থ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মিলিয়ে হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমূহ এর পাঠক সারাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। হুমায়ূন আহমেদ এর বই সমগ্র পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিতও হয়েছে। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জন করেছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), একুশে পদক (১৯৯৪), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮), শিশু একাডেমি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদকসহ নানা সম্মাননা। হুমায়ূন আহমেদ এর বই, চলচ্চিত্র এবং অন্যান্য রচনা দেশের বাইরেও মূল্যায়িত হয়েছে৷ ১৯৪৮ সালের ১৩ই নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় কুতুবপুরে পীরবংশে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের বেলভ্যু হাসপাতালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। গাজীপুরে তাঁর প্রিয় নুহাশ-পল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
অনেক সুন্দর একটা বই।বইটা পড়ে অনেক কিছু জানতে পারলাম।ধন্যবাদ হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে এত সুন্দর একটা বই পাঠকদের উপহার দেওয়ার জন্য।
Read More
Was this review helpful to you?
By Misbah Chowdury,
11 Apr 2022
Verified Purchase
হুমায়ূন আহমেদ এর কোন উপন্যাসের চাইতে এক বিন্দু কম আকর্ষণীয় নয় এই বইটি। ??✌️
Read More
Was this review helpful to you?
By Shams Farabi,
05 Mar 2021
Verified Purchase
অসাধারণ একটা বই!
Read More
Was this review helpful to you?
By Sk. Atiqur Rahman,
05 Mar 2022
Verified Purchase
ভালো বই
Read More
Was this review helpful to you?
By Sumon Ghosh,
01 Apr 2022
Verified Purchase
Nice
Read More
Was this review helpful to you?
By Tabbasum Mou,
30 Aug 2017
Verified Purchase
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই:অাপনারে অামি খুঁজিয়া বেড়াই। ধরণ:অাত্নজীবনী। লেখক:হুমায়ূন অাহমেদ। প্রচ্ছদ :ধ্রুব এষ। প্রথম প্রকাশ :ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪। প্রকাশনী :কাকলী। পৃষ্ঠা সংখ্যা :৩৮৮। মুদ্রিত মূল্য:৪০০ টাকা।
প্রতিক্রিয়া :'অাপনারে অামি খুঁজিয়া বেড়াই 'শুধুই একটি বই নয়। এটি একটি জীবন।একটি ঝকঝকে মূল্যবান জাদুর অায়না। যে অায়নায় চোখ রাখলে দেখতে পাওয়া যায় জনপ্রিয় নন্দিত মহৎ এক লেখকের জীবনের ছোট ছোট জীবন্ত সব স্মৃতিগুলোকে। বইটিকে বলা যায়,বাঙালি পাঠকের ঘরের খোলা জানালায় দখিন হাওয়া,অাষাঢ়ের বৃষ্টির প্রথম ফোঁটা। বইপ্রিয় বাঙালি পাঠকের কাছে হুমায়ূন অাহমেদের এক একটি বই যেন ভীষণ ভাললাগার বঙ্গোপসাগর। এই বইটির মাঝে যেমন হুমায়ূনের জীবন দর্শনকে খুঁজে পাওয়া যায়,তেমনি খুঁজে পাওয়া যায় তার বিখ্যাত সব সৃষ্টি কর্মকে। ১৩ই নভেম্বর ১৯৪৮সালে ময়মনসিংহের মোহনগঞ্জে ফয়জুর রহমান অাহমেদ ও অায়শা বেগম দম্পতির জ্যেষ্ঠ সন্তান কাজল জন্মগ্রহণ করে।এই কাজলই অামাদের প্রিয় লেখক হুমায়ূন অাহমেদ। জন্মলগ্ন থেকেই তিনি যেমন এই পৃথিবীর মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসার স্বাদ পেয়ে বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে কাঁদতে ভুলে গিয়েছিলেন তেমনি ভাবে অকস্মাৎ ভাবে ধেয়ে অাসা একটি ক্ষুদ্র চাপড়ে অভিমানী লেখক অাকাশ ফাঁটিয়ে কেঁদেছিলেন।নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে চরম অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মাঝে তার শৈশব জীবন কাটে। বাবা ফয়জুর রহমান একজন সৎ পুলিশকর্মকর্তা ছিলেন। বেতনের অাশিটি টাকাই ছিলো লেখকের বাবার একমাত্র রোজগার, যার প্রায় অর্ধেক অংশ ই ফয়জুর রহমান খরচ করতেন তার খামখেয়ালি ইচ্ছে পূরণের পেছনে। লেখকের মার একখানা ভাল শাড়িও ছিলনা। সারা মাসে তাদের খাবারের মেনু ছিল ডাল, ডালের বড়া অার নিমপাতা ভাজা।অর্থনৈতিক সংকটের মাঝে জন্ম নিয়েও লেখক বাবা মার হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা থেকে কখনো বন্ঞ্চিত হননি। বাবা মার কাছে প্রথম সন্তান হলো চমৎকার একটি জীবন্ত খেলনা। অার দশটা বাবা মার মত লেখকের বাবা মা লেখকের প্রতিটি দুস্টুমিতে খুঁজতেন প্রতিভা। ছোট্ট কাজল রেগে গিয়ে খাবার থালা উড়িয়ে দিলে তার বাবা বলতেন "দেখ দেখ ছেলের রাগ দেখ। রাগ থাকা ভাল।এই যে থালা সে উড়িয়ে দিল এতে প্রমাণিত হলো তার পছন্দ -অপছন্দ দুটিই খুব তীব্র । " কিন্তু লেখকের কপালে সুখ বেশিদিন সইল না।পুত্র ও মাতার মাঝে নেমে এল নির্মম বিচ্ছেদ । মার অসুস্থতার জন্য ছোট্ট কাজলকে পাঠিয়ে দেওয়া হল নানার বাড়ি। দুইবছর সেখানেই সময় কাটল লেখকের। তিনবছর বয়সে লেখক অাবার ফিরে এলেন মার কোলে। সিলেটের মীরাবাজারে বাবা মার সাথে শুরু হল তার অারেক জীবন। শৈশব থেকে তিনি হয়ে ঊঠলেন স্বাধীনচেতা স্বভাবের। দুপুরে লেখকের মা বিশ্রামের জন্য বিছানায় গা এলিয়ে দিলেই সেই সুযোগে লেখক বাসার বাইরে বেড়িয়ে পড়তেন। ঘুরতেই ঘুরতেই লেখকের সাথে এক অাইসক্রিম ওয়ালার পরিচয় হলো। লেখকের মায়াময় চাহনি হয়ত সেই অাইসক্রিমওয়ালার শূন্য পিতৃহৃদয়ে স্নেহের সন্ঞ্চার করেছিল। অাইসক্রিম ওয়ালা বিনা পয়সায় লেখককে প্রতিদিন অাইসক্রিম খাওয়াতেন। বিনয়ী লেখক সেই অাইসক্রিম ওয়ালাকে অাজো মনে রেখেছেন।জগতের কঠিন রুঢ় বাস্তবতার মাঝে ধীরে ধীরে তিনি শৈশব থেকে কৈশোরে পর্দাপন করলেন। শুক্লাদি নামের এক সুন্দরী প্রতিবেশী তরুণীর হাত ধরেই তিনি প্রবেশ করেন স্বপ্নলোকের জগতে।যে জগতে শুধু বই অার বই। অলস ক্লান্ত দুপুরে লেখক চুপিচুপি নতুন বইয়ের নেশায় তার বাবার ব্যক্তিগত লাইব্রেরি থেকে বই চুরি করতেন। এভাবেই বইয়ের সাথে লেখকের তৈরী হল এক অক্ষয় সম্পর্ক । অসাধারণ জ্ঞাণের অধিকারী লেখক ঐ সময় একবার যা শুনতেন বা দেখতেন পরক্ষনেই তা হুবহু বলে দিতে পারতেন। বাবার সরকারি চাকুরীর সুবাদে বহু বিচিত্র মানুষের সাথে তার পরিচয় ও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তাদের গল্পও তিনি বলে গেছেন। তার অাজকের হুমায়ূন হবার পেছনে যে বহু মানুষের অবদান তা গল্পগুলো পড়লেই বোঝা যায়। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে ১৯৬৫সালে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। বাবা মা ভাই বোনকে ছেড়ে এ যেন তার স্বেচ্ছায় নির্বাসন। বিচিত্র জীবনের অধিকারী লেখক এসময় জনৈক এক যাদুকরের কেরামতিতে মুগ্ধ হয়ে জাদু শেখা শুরু করলেন। কলেজের ফাংশনে, স্যারদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে গিয়ে জাদু দেখাতেন তিনি ঐ সময়। ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসীন হলে শুরু হল তার অারেক জীবন। একে একে রচনা করলেন "নন্দিত নরকে "অার "শঙ্খনীল কারাগার"নামের দুটি উপন্যাস। তার লেখনীতে যেমন তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থার চালচিত্র উঠে এসেছে তেমনি উঠে এসেছে দরিদ্র ছাত্রদের কথা। ঝোঁকের মাথায় গুলতেকিনের সাথে বিয়ে অতঃপর নব্যবিবাহিতা অন্তঃসত্তা স্ত্রী ও পরিবার ছেড়ে লেখক পিএইচ ডি ডিগ্রী অর্জন করতে বিদেশ চলে যান। হোটেল গ্রেভারইনে তার অারেকটি জীবনের শুরু হয়। নতুন দেশ,সংস্কৃতি, মানুষজনকে পেছনে ফেলে ঝাঁচকচকে অামেরিকা থেকে অনেক দূরে গিয়ে তার মন পড়ে রইল বাংলাদেশে। ফিরে যাবেন মনস্থ করেছেন তখনই যে রেস্টুরেন্টে তিনি রোজ খেতে যেতেন সেখানকার কয়েকজন ওয়েট্রেসের ভালবাসায় তিনি সিক্ত হলেন। দেশকালের সীমানা পেরিয়ে মানুষের মানবিকতা অার ভালবাসার যে কখনো পরিবর্তন হয়না তাই লেখক অনুভব করলেন। কোন অভিজ্ঞতা না থাকা স্বতেও ভর্তি হলেন কোয়ান্টাম মেকানিক্স নামের জটিল একটা সাবজেক্টে। পরীক্ষায় প্রথমবারই অকৃতকার্য হলেন। তবুও তার পথচলা থেমে থাকেনি। কঠিন অধ্যবসায়ের দ্বারা কোর্সের পরবর্তী পরীক্ষায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে ১০০তে একশো পেলেন। গুলতেকিন ছিলেন তার ভালবাসার অধিষ্ঠাত্রী দেবী। এই বইয়ের বেশ খানিকটা অংশ জুড়ে লেখকের দাম্পত্য জীবনের গল্প উঠে এসেছে কোন না কোন ভাবে। ডিগ্রী অর্জন করে দেশে ফেরবার পর লেখকের শিক্ষকতা জীবন অার লেখক জীবন একইসাথে চলতে লাগল। বাবা হিসেবে তিনি ছিলেন অসাধারণ, অতুলনীয় । জোছনায় তিনি তার মেয়েদের সাথে হাত ধরে শহীদুল্লাহ হলের বিরাট মাঠে হেঁটে বেড়াতেন। সংসারের অর্থ নৈতিক অবস্থা উন্নতির জন্য তিনি টিভিতে নাটক লেখা সৃষ্টি করলেন। নিজের হাতে তৈরী করলেন কালজয়ী চরিত্র বাকের ভাইকে। কোথাও কেউ নেই তৈরী, প্রচার,ইতিহাস সৃষ্টি, লেখকের অাক্ষেপ সবই জানতে পারবেন এই বইটির এই বিশেষ অধ্যায়ের অংশটুকু পড়লে। সাধারণ মানুষের সাথে তার সম্পর্ক ছিল সহজ ও সাবলীল । মানুষের জন্য তিনি মিসির অালীর মতই মনে গভীর মমতা লালন করতেন। তার লেখক সত্তা যেমন মিসির অালীর মত লজিকে চলত, অাবার সেই সত্তায় হিমুর মত অ্যান্টি লজিকেও চলতে চাইত। জীবনের যে অংশে তিনি স্পর্শ করেছেন সেখানেই সোনা ফলেছে। তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ শক্তি,মানুষের প্রতি ভালবাসায় তিনি অতুলনীয় লেখক। যার কোন মৃত্যু নেই। তিনি বেঁচে অাছেন পাঠকদের হৃদয়ে। তার বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায়। একজন লেখককে চিনতে হয় লেখার মধ্য দিয়ে ব্যক্তি গত ভাবে তাকে চেনার প্রয়োজন নেই বলে মনে করি । হুমায়ূন অাহমেদকে চিনতে হলে জানতে হলে ধারণ করতে হলে এই বইটিই পড়তেই হবে
Read More
Was this review helpful to you?
By মাদিহা মৌ,
03 Oct 2016
Verified Purchase
আমার কাছে রিভিউর মানে হলো পাঠককে আকর্ষণ করা। আমার লেখায় যদি দুই একজন পাঠক আকর্ষিত হয়, ওটুকুই আমার কাছে রিভিউ লেখার পূর্ণতা। তাই আমি কেবলমাত্র সেইসব বইয়ের রিভিউই লিখি, যেসব বই আমার কাছে ভালো লাগে। যেসব বই ভালো লাগে না, সেসব বইয়ের রিভিউ লেখাকে সময়ের অপচয় মনে হয়। . লম্বা সময় থ্রিলারে ডুবে থাকার পর হুমায়ূন স্যারের বইয়ের কোন বিকল্পই নেই। আমি হুমায়ূন স্যারের অনেক বই পড়েছি। কোন কোন বই একাধিকবার করেও পড়েছি। তাঁর কোন বই পড়ে সাজিয়ে গুছিয়ে রিভিউ লিখিনি। অল্পকিছু (স্যারের লেখা মোট বইয়ের সং্খ্যার সাথে তুলনা করলে। উনার বই ২৮০ ) মাস্টারপিস ছাড়া স্যারের বেশিরভাগ বইয়ের কাহিনি একই প্লটে, একই প্রেক্ষাপটে, একই গতিতে এগিয়ে গেছে। ফলে বইগুলি পড়ার সময় একটা মোহ, ঘোর, ভালোলাগা কাজ করলেও, পড়া শেষ করার পর তা বিশেষত্বহীন লাগে। তখন আর উল্লেখ করার মত তেমন কিছুই খুঁজে পাই না। তাই কিছু লেখাও হয় না তা নিয়ে। . আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই - আত্মজীবনীমূলক বই। এতে চুয়ান্নটি ছোটবড় রচনা আছে। উনার শেষ দিককার রংপেন্সিল, কাঠপেন্সিল, বলপয়েন্ট, ফাউন্টেনপেন, হিজিবিজি - টাইপ আত্মজীবনীমূলক লেখাগুলি আমার তেমন ভালো লাগেনি। ঘুরেফিরে একই কাহিনি যেন অনেকবার এসেছে। কিন্তু এই বইটা, খুব খুব চমৎকার। আসলে স্যারের প্রথম দিককার বইগুলির সবই চমৎকার। . লেখালেখির প্রথম দিকের বইগুলি, বিশেষ করে ওই সময়ের আত্মজীবনীগুলি আমার ভালো লাগার কারণ একজন - গুলতেকিন। উনার সাথেকার সময়টা, ওই পরিবারের বাচ্চাদের সাথের স্মৃতিগুলি আমাকে খুব নাড়া দেয়। আমার খুব ভালো লাগে। এই পরম মমতাময়ী মানসীকে নিয়ে স্যারের অনুভূতিগুলি আমাকে ছুঁয়ে গেছে। বার বার ছুঁয়ে গেছে। . আমি জানি, একজন সাধারণ পাঠিকা হয়ে তাঁর মত কারোর ব্যক্তিগত জীবনের দোষ ত্রুটি ধরে বর্ণনা করাটা আমার শোভা পায় না। তবুও কিছু ব্যাপার না বলে পারি না। আর যেহেতু স্যারের ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনাগুলি নিয়ে লেখা বইয়ের রিভিউ লিখছি, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খানিকটা সমালোচনা করতেই পারি। আমার মাথায় ধরে না তিনি কী করে, কেমন করে এতগুলি বছরের ভালোবাসা ছেড়ে দিলেন। কী করে মিইয়ে গেল সেটা? খুব কষ্ট হয়। বইটা পড়তে পড়তে জানতে ইচ্ছে করেছিল, কেমন লেগেছিল গুলতেকিন ম্যামের? এই অসহ্য কষ্ট কেমন করে সহ্য করেছিলেন তিনি? কিন্তু পরিবর্তন ডট কমে ম্যামের দেওয়া ওই সাক্ষাতকারে এসব সম্পর্কে জেনে আরো বেশি খারাপ লেগেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো স্যারকে মিথ্যেবাদীই মনে হয়েছে। জানি না, ওই সাক্ষাতকারের সবটা সত্যি কিনা। বিশ্বাস করতে খুব কষ্ট হয়েছে। অবশ্য বিশ্বাস না করেও উপায় নেই। এই সময়টায় এসে গুলতেকিন ম্যামের মিথ্যে অভিযোগ করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারন নেই। . যাকগে, এই বইটা অসম্ভব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে উনার ছোটবেলায় দেশের এমাথা থেকে ও মাথায় ঘুরে বেড়ানোর কাহিনি, ওসব এলাকার দারুণ সব বর্ণনা, খুবই চমৎকার লেগেছে। . আমেরিকা, আমেরিকার প্রকৃতি, আমেরিকানদের দৃষ্টিভঙ্গী, স্বভাব, এসবকিছুর বর্ণনা পড়েও খুব ভালো লেগেছে। দেশের প্রতি তাঁর প্রচন্ড ভালোবাসাও ছিল চোখে পড়ার মত। . হুমায়ূন আহমেদ পড়তে শুরু করলে অদ্ভুত কিছু অনুভূতি হয়। হুট করে জীবনের মানে খুঁজতে ইচ্ছে হয়। কিছু না বলা কথা বলতে ইচ্ছে হয়। কিছু অজানাকে জানতে, কিছু পাগলামিকে প্রশ্রয় দিতে, বৃষ্টি-জোছনাকে উপভোগ করতে তো স্যারই শিখিয়ে গেছেন। এসবের জন্য তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।
Read More
Was this review helpful to you?
By Galiba Yesmin,
17 Apr 2020
Verified Purchase
"হুমায়ূন আহমেদ"কে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন হয় না, একটা মানুষ একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচিত্রনির্মাতা। একটা মানুষের মাঝে এতো গুন থাকে কীভাবে তা সত্যি অবাক করা বিষয় । তার লিখা অসংখ্য বই এখন আমাদের অসংখ্য অবসর সময় সুন্দর করে তুলে। আমার মতে স্যার সহজ সাবলীল ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করতে পারতেন খুব সহজে তাই তার এবং তার লিখার এতো জনপ্রিয়তা । "আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই" বইটা মূলত তার ব্যাক্তি জীবন নিয়ে লিখা এবং তার নিজেকে নিয়ে লিখা কিছু বইয়ের উৎস । এখানে তার মা -বাবা , ভাই -বোন সবার কথা আছে , শিক্ষা জীবন এবং তার বেড়ে উঠার জায়গা গুলোর পরিচয়ও উঠে এসেছে এই বইতে । প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে নানাবাড়ি - দাদাবাড়ি যে আদরের আর খুব বেশী আনন্দের স্থান তা বিভিন্ন কথায় আর কিছু ছোট ছোট কাহিনী তে স্যার এই বইতে প্রকাশ করেছেন । বাবার হাত ধরে বই পড়ার অভ্যাস হয়ে ওঠা এবং তার সাহিত্য জীবনের সূচনা'র ঘটনা গুলো বলেছেন । দেশের পড়া লিখা শেষ করে বিদেশ যাওয়া আবার দেশে , জীবনে হাজার রকমের মানুষের সাথে পরিচয় হওয়ার আর বিভিন্ন রকমের বন্ধু - বান্ধব বানানো এবং চার - পাশে যে কতো রহস্যময় মানুষ আছে তাঁদের কথা জানা এবং এতো মানুষের মাঝ থেকেই গল্পের চরিত্র গুলো তুলে আনা এসব কিছু লিখেছেন ।তার জীবনে ১৯৭১ এর যুদ্ধের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা'র কথা বলেছেন , যারা খুব আগ্রহ নিয়ে জানতে চান -যুদ্ধের সময় " হুমায়ূন আহমেদ " কোথায় ছিলেন ! কি করছিলেন ! তাঁরা এই বই পড়লে জানতে পারবেন এসব প্রশ্নের উত্তর ।তার গল্পের নায়িকা গুলোকে তিনি কীভাবে দেখছেন আর কীভাবে সাজাচ্ছেন সেসব বলেছেন ।ক্ষুদ্র থেকে নিজেকে বড় করে তোলা , জীবন সংগ্রামে হার না মেনে মাথা উঁচু করে শিশু কাজল থেকে সবার প্রিয় "হুমায়ূন আহমেদ ' হয়ে উঠার কথা তিনি খুব অবলীলায় বলে গেছেন । প্রকৃতিও যে মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে তা খুব ভালো ভাবেই প্রকাশ করেছেন । বইয়ের নাম অনুসারে বলা যায় , নিজেকে খুঁজে পাওয়ার যে আকাঙ্খা তা ছোট বড় সব মানুষের আছে , এই আকাঙ্খা তার জীবনেও ছিল , নিজেকে খুঁজতে খুঁজতে একদিন মানুষের জীবনটাই ফুরিয়ে যায় তখন পারি জামতে হয় অন্য কোন ভুবনে ,স্যার এর নিজস্ব নিজেকে খুঁজে বেড়ানোর কথা গুলোই তিনি এই বইতে বলতে চেয়েছেন । বইটা পড়ে শেষ করেই রিভিউ লিখতে বসলাম তাই বইয়ের হাজার কথা মাথায় ঘুরছে , কোন কথা লিখব আর কোনটা বাদ দিবো বুঝে উঠতে পারছি না তাই কথা গুলো এতো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে ।স্যারকে জানার জন্য এবং তার জীবন সম্পর্কে যাদের অতি আগ্রহ আছে তাঁরা এই বইটা পড়ে নিজেদের আগ্রহের কিছু চাহিদা মেটাতে পারবেন । তাই সবাই "আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই" বইটা সংগ্রহ করে পড়ে ফেলুন । শুভ হোক আপনার পাঠ্য কার্যক্রম।
Read More
Was this review helpful to you?
By Rahat,
17 Jan 2020
Verified Purchase
হুমায়ূন আহমেদের "আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই" বইটি তার আত্মজীবনী মূলক বই। একজন লেখক এত সুন্দর করে নিজের আত্মজীবনী লিখতে পারে সেটা কল্পনাও করা যায় না। হুমায়ূন আহমেদ মানেইতো আমরা জানি পাঠকের অন্যরকম একটি চাহিদা। এটিতেও তার ব্যতিক্রম নয়। এই বইটির বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে এটিতে তার গুলতেকিনের সাথে কাটানো জীবনকে উপস্থাপন করেছেন। কতবার যে পড়েছি! যতই পড়ি বারবার মনে হয় আবারো পড়ি।