"দুষ্টুগুলোর আজ মন খারাপ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বেশ কয়েক দিন ধরে ভীষণ একটা সমস্যায় পড়েছে সাদাবরা। ক্লাসে ওরা তাই খুব মন খারাপ করে বসে থাকে। ব্যাপারটা টের পেয়েছেন অংক স্যা... See more
"দুষ্টুগুলোর আজ মন খারাপ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বেশ কয়েক দিন ধরে ভীষণ একটা সমস্যায় পড়েছে সাদাবরা। ক্লাসে ওরা তাই খুব মন খারাপ করে বসে থাকে। ব্যাপারটা টের পেয়েছেন অংক স্যার। ক্লাসে এসে তিনি একদিন বললেন, সাদাব, তুমি তাে কখনও মিথ্যা কথা বলাে না, সব সময় সত্য কথা বলাে। আজও একটা সত্য কথা বলাে তাে কয়দিন ধরে দেখছি তােমাদের মন খুব খারাপ, কেন বলাে তাে? মাথা চুলকাতে চুলকাতে বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়াল সাদাব, কিছু বলল না। রিসাদের দিকে তাকালেন স্যার। সেও বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়াল, কিন্তু সাদাবের মতাে চুপ হয়ে রইল। মুখ খুলল না একদম। কেন?
বর্তমান সময়ের তরুণ বাংলাদেশী লেখকদের তালিকা তৈরি করতে গেলে অনায়েসেই প্রথম সারিতে জায়গা করে নেবেন কথাসাহিত্যিক সুমন্ত আসলাম। তাঁর জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায়, মা রওশনারা পারুল ও বাবা মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার। স্ত্রী ফারজানা ঊর্মি আর মেয়ে সুমর্মীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে এই লেখকের সংসার। সিরাজগঞ্জে বাড়ির পারিবারিক লাইব্রেরিতেই বই পড়ার হাতেখড়ি তার। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠলেও লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পরে। ছোটগল্পের বই ‘স্বপ্নবেড়ি’ তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই, যা প্রকাশনায় ছিল ‘সময় প্রকাশন’। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষিত করে তুলতে, চাইল্ড ড্রিম সোসাইটি নামের একটি সংগঠনে। এছাড়াও জড়িয়ে আছেন সাংবাদিকতা পেশার সাথে। পাঠক জনপ্রিয়তার দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে সুমন্ত আসলামের সেরা বই হিসেবে নাম উঠে আসবে ‘হয়তো কেউ এসেছিল’, ‘জানি না কখন’ বা ‘কে তুমি’ অথবা ‘যদি কখনো’ এর মতো জনপ্রিয় সব বই এর নাম । এছাড়াও ‘নীল এই যে আমি!’, ‘আমি আছি কাছাকাছি’, ‘অ্যালিয়ান’, ‘জানালার ওপাশে’, ‘রোল নাম্বার শূন্য’, ‘বীভৎস’, ‘কেউ একজন আসবে বলে’, ‘জিনিয়াস জিনিয়ান’, ‘কোনো কোনো একলা রাত এমন’, ‘তবুও তোমায় আমি’, ‘অনুভব’, ‘মিস্টার ৪২০’, ‘স্পর্শের বাইরে’, ‘ভালো থেকো ভালোবেসে’, ‘ডাঁটি ভাঙা চশমা রাফিদ’, ‘অযান্ত্রিক’, ‘জ্যোৎস্না নিমন্ত্রণ’, ‘প্রিয়ব্রতর ব্যক্তিগত পাপ’, ‘জ্যোৎস্না বিলাস’, ‘মহাকিপ্পন’, ‘তপুর চালাকি’, ‘আশ্চর্য তুমিও!’, ‘হাফ সার্কেল’, ‘কঞ্জুস’, ‘মাঝরাতে সে যখন একা’, ‘আই এম গুড ডু’, ‘আই সে দ্য সান’, ‘তুমি ছুঁয়ে যাও বৃষ্টি তবু’সহ আরো অনেক বই রয়েছে লেখক সুমন্ত আসলাম এর বই সমগ্র এর তালিকায়। এছাড়াও সিরিজ আকারে লিখেছেন ‘বাউন্ডুলে’ ও ‘পাঁচ গোয়েন্দা’র মতো জনপ্রিয় কিছু বই। বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে, এমনকি একুশে বই মেলাতেও সুমন্ত আসলাম এর বই সমূহ এর ব্যাপক চাহিদা লক্ষ্য করা যায়। ভাষাগত সারল্য ও সাবলীলতা তাঁর জনপ্রিয়তার অন্যতম বড় কারণ। মানুষকে কেন্দ্র করে তাকে আবর্তিত করে যা যা আছে তা-ই মূলত তার লেখার বিষয়বস্তু।
সুমন্ত আসলাম। এখনকার তরুণ পাঠকের কাছে ‘প্রিয় লেখক’ নাম এটি। দু’চোখ ভরা স্বপ্ন তার। দেশ, জাতি, সমাজ, মানুষ সবাইকে নিয়েই তিনি স্বপ্ন দেখেন। সবার ভালো থাকার স্বপ্ন দেখেন। অনেক ভালোবাসা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। আর, সে সব স্বপ্নের বীজ তিনি বপন করেন পাঠকের মনেও। তাইতো কাছের বন্ধুরা তাকে বলে স্বপ্নবাজ। মরহুম সোহরাব আলী তালুকদার ও রওশন আরা পারুলের সন্তান তিনি। জন্মেছেন সিরাজগঞ্জে। অসম্ভব দুষ্ট ছিলেন তিনি ছেলেবেলায়। ঘুড়ি উড়ানো আর লাটিম ঘুরানোর স্মৃতিঘেরা ছেলেবেলা তার। অনেক আনন্দময় শৈশব ও কৈশর কাটিয়েছেন। তবে এখন বড়বেলায় এসেও সেই আনন্দে ভাটা পরেনি এতটুকুও। সব সময় তিনি আনন্দে থাকেন। তার দাবী বাংলাদেশে যদি ১০০ জন মানুষ থাকেন যারা আনন্দ নিয়ে বেঁচে আছেন তার মধ্যে তিনিও একজন। বিষয়টা ভাবতেও তার খুব ভালো লাগে। ছোটবেলায় নিজ বাড়ীতেই পারিবারিক লাইব্রেরী ছিল এওং সেই সূত্রেই বই পড়ার অভ্যাস। তাঁর লেখালেখির শুরু ঢাকায় আসার পর। ‘মৌচাকে ঢিল’ নামে গল্প ছাপা হত পত্রিকায়। সেই থেকেই শুরু। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৭২টি। এবারের (২০১৬) এর একুশে বইমেলায় তাঁর “দুষ্টুগুলোর আজ মন খারাপ” - বইটি প্রকাশিত হয়েছে অনুপম প্রকাশনী থেকে। বইটির গ্রন্থস্বত্ব লেখক, প্রকাশক মিলন নাথ এবং প্রচ্ছদ ্ব অলঙ্করণ করেছেন বোরহান আজাদ। বইটি মূলত কয়েক বন্ধুদের নিয়ে লেখা। এর মধ্যে মূল চরিত্রে আছে সাদাব ও রিসাদ। বেশ কয়েকদিন ধরে সাদাবরা একটা সমস্যায় পড়েছে, আর তাই ক্লাসে তারা বেশ মন খারাপ করেই বসে থাকে। এটা বুঝতে পেরে স্যার সাদাবের কাছে জানতে চায় মন খারাপের কারণ। কিন্তু সাদাব কোন জবাব দেয় না। এরপর স্যার রিসাদের দিকে তাকালে, সেও চুপ করে থাকে। কোন জবাব দেয় না কেউ। গল্প এভাবেই আগাতে থাকে। ইতোমধ্যে বইটি বেশ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।