এই বইটি আদতে ক্রিকেট লিটারেচার লিখবার একটি প্রয়াস; সেপ্রয়াসে কতখানি সফল বা ব্যর্থ হয়েছি সেব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা সংশয়ী বলেই বইয়ের নাম বেনিফিট অব ডাউট। বইয়ে দুই ধরনের নিব... See more
এই বইটি আদতে ক্রিকেট লিটারেচার লিখবার একটি প্রয়াস; সেপ্রয়াসে কতখানি সফল বা ব্যর্থ হয়েছি সেব্যাপারে ব্যক্তিগতভাবে কিছুটা সংশয়ী বলেই বইয়ের নাম বেনিফিট অব ডাউট। বইয়ে দুই ধরনের নিবন্ধ আছে; একটি ধরনে ক্রিকেটের সাইকোলজিকাল ও সোশ্যাল ইস্যুগুলো আলোচিত হয়েছে। অপরটিতে চিঠি ফরম্যাট অনুসৃত হয়েছে, যেখানে চিঠির মাধ্যমে ক্রিকেট খেলোয়াড়, আম্পায়ার, ধারাভাষ্যকার, ক্রিকেট প্রশাসকদের জীবনি, কার্যক্রম, অর্জন, ক্রিকেটে অবদান প্রভৃতি বিষয়াদির প্রতি দৃষ্টিপাত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোট ১১টি তাত্ত্বিক নিবন্ধ এবং ১২টি চিঠির সন্নিবেশ ঘটেছে এ বইয়ে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানপর্ব, ক্রিকেট খেলা মানুষ কেন দেখে- দেশাত্মবোধকে ক্রিকেটের সাথে মিশিয়ে ফেলার ক্ষতিকারিতা, বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি- সমর্থকদের আচরণ ও গুণগত মান, বিগত ২০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, বাংলাদেশে ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেয়ার চিন্তা করার মতো পর্যাপ্ত অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কিনা; এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো কী কী, ক্রিকেটের বিশ্বায়ন কেন জরুরী- টেস্ট ক্রিকেট এই বিশ্বায়নের পথে বাধা কিনা, ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য আজীবনের নিষেধাজ্ঞা মানবিক সিদ্ধান্ত কিনা- ম্যাচ ফিক্সিংয়ে শাস্তিপ্রাপ্ত ক্রিকেটারকে পুনরায় খেলতে দেয়ার যৌক্তিকতা, অধিনায়কত্বের কলাকৌশল ও রাজনৈতিক এসেন্স, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য কিছু পারফরম্যান্স বিচার, একজন গড় ক্রিকেটারের সাইকোলজি প্রভৃতি বিষয়গুলো দিয়েই সাজানো হয়েছে নিবন্ধ অংশ। চিঠি অংশে প্রাপক তালিকায় আছেন শচীন টেন্ডুলকার- শেন ওয়ার্ন, ডেভিড শেফার্ড- স্টিভ বাকনার, টনি গ্রেগ- মাইকেল হোল্ডিং, এডাম গিলক্রিস্ট- কুমার সাঙ্গাকার- মহেন্দ্র সিং ধোনি, শোয়েব আখতার- কেভিন পিটারসেন- হার্শেল গিবস, রাহুল দ্রাবিড়- শিবনারায়ণ চন্দরপাল- স্টুয়ার্ট ম্যাকগিল, কেরি প্যাকার- এন শ্রীনিবাসন, ওয়াকার ইউনিস- ব্রেট লি, আকরাম খান- মোহাম্মদ রফিক, আশরাফুল- হ্যান্সি ক্রনিয়ে, সনাথ জয়াসুরিয়া- ক্রিস গেইল এবং ব্রায়ান লারা- জ্যাক ক্যালিস।
নিবন্ধের শুরুতে ‘টস’ নামে একটি অংশ আছে যেখানে কেস স্টাডির মাধ্যমে নিবন্ধটি লিখবার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়েছে। সকল লেখায় কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে ‘পিচ’ এর উপস্থিতি লেখাগুলোকে ভিন্নমাত্রা দেবার উদ্দেশ্যে। এই পিচ মূলত লেখকের ব্যক্তিগত দর্শনের প্রতিচ্ছবি। বাংলা ভাষার ক্রিকেট বইগুলো যেখানে কলাম লেখার সংকলন অথবা তারকা ক্রিকেটারের জীবনচরিত হয়ে থাকে, সেখানে এতো ব্যাপক বিষয়বস্তু এবং কিছুটা ব্যতিক্রমী গঠনবৈশিষ্ট্যের সমণ্বয়ে ক্রিকেটের মৌলিক বই লেখার উদ্যোগ বস্তুত ক্রিকেটের প্রতি গভীর ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। ক্রিকেটে আগ্রহী মানুষজনের কাছে সেই ভালোবাসা গ্রহণযোগ্যতা পেলেই এই বইয়ের চূড়ান্ত সার্থকতা অর্জিত হবে।
প্রথমত আমি একজন মানুষ। তাই সবার মত আমারও একটি জন্মস্থান-জন্মকাল ছিল। তবে তা প্ৰকাশ-অপ্ৰকাশে গল্পের প্রাসঙ্গিকতায় কোনই গুরুত্ব তৈরি হয় না। ঠিক যেমনটা হবে না। আমার শিক্ষাগত কিংবা পেশাগত পরিচয়ে। অক্ষরজ্ঞান নেয়া ও কিছু কাগুজে সনদ সংগ্রহের প্রয়োজনে যেমন কোন প্রতিষ্ঠানে আমাকে পড়াশোনা তাগিদেও কোথাও নিযুক্ত আছি, এটাই মৌলিক সত্য। মানুষের পেশাগত কিংবা সামাজিক আইডেন্টিটি তত্ত্বে কখনোই আস্থা পাইনা। নিজেকে তাই "ফ্রি সোল’ বা ‘মুক্ত আত্মা’ পরিচয় দিতেই পরম স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য আমার। তবে গল্প নিয়ে যে কোন কট্টর সমালোচনাকে ক্লেদাক্ত প্ৰশংসার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যায়ন করি। সুতরাং সমালোচনার উদ্দেশ্যে চেনা-অচেনা যে কারো সঙ্গে আন্তর্জালিক যোগাযোগ হতে পারে। সার্বক্ষণিক শর্তেই।
রিভিউঃ বেনিফিট অব ডাউট লেখকঃ মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়।
শীতল যুদ্ধের পরিশীলিত রূপ ক্রিকেট। যদিও একসময় বৃটিশ সম্রাজ্যভুক্ত দেশগুলোতে প্রজা বিদ্রোহ ঠেকিয়ে রাখতে প্রজাদের দীর্ঘমেয়াদী খেলার মধ্যে ডুবিয়ে রাখাই ছিল এ খেলার উদ্দেশ্যগত দিক। ১৯০৯ সালে মাত্র তিনটি দলের সমন্বয়ে গঠিত হওয়া ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স (আই.সি.সি-এর পূর্বনাম) কতৃক বর্ণবাদ বৈষম্যের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট টিম নির্বাসিতও হয়েছিলো একবার। এভাবেই অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ক্রিকেট আজ পেয়েছে স্বাধীন একটি স্বত্বা। সেসব পরিক্রমার ধারাবাহিক বর্ণনাই উঠে এলো বইটিতে। ভাবছেন চার-ছক্কার হই-হই বাদ দিয়ে কেনো এসব কচলানো! এখানেই বইটির বিশেষত্ব। অরুপ মহিমা। স্কোর বোর্ডের দিকে তাকিয়ে, আর দিন শেষে হার-জিতের পরিসংখ্যান গণনা করে পাতা ভরে ওঠে হয়তো, কিন্তু প্রকৃত ক্রিকেট নিয়ে একটি বই মলাটবদ্ধ করতে হলে প্রবেশ করতে হয় ক্রিকেটের প্রাণ কুঠুরিতে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে বেনিফিট আব ডাউটে। দশদিক থেকে ক্রিকেটের উপর নজর রেখেই লেখক মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় হাতে কলম তুলে নিয়েছেন। ক্রিকেট লেখক মিহির আলির একটি ভাষ্য ছিল, ‘ক্রিকেট খেলার রুপকে ইংল্যান্ডের সুসঙ্গত সামাজিক শ্রেনি কাঠামোকে নির্দেশ করা হয়, ব্যাটসম্যান এখানে সামাজিক কর্তাব্যক্তি, বোলার খেটে যাওয়া মধ্যবিত্ত, আর ফিল্ডার সমাজের নিম্নজীবি মানুষ, যাদের ঘামে সমাজ টিকে থাকে, কিন্তু নিজেরা শ্রমের স্বীকৃতি পায় না।’ সেই ভাষ্যের তাল মিলিয়ে ২০১৫ তে এসে নবীন লেখক মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় করেছেন ক্রিকেটের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, কূটনৈতিক প্রভৃতি বিষয়ের সম্পর্ক নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ তাঁর এ বইটিতে। কিভাবে এ বাহ্যিক প্রভাবকগুলো ক্রিকেটের উপর করে যাচ্ছে সুক্ষ অস্ত্রপচার, আর এর ফলাফল কতদুর গড়াচ্ছে, মূলত সেই নিয়েই বাকচিত পুরো বই জুড়ে। মাঠের ক্রিকেট স্বচক্ষে দেখা গেলেও আমরা আমজনতা টেবিলের ক্রিকেট তথা ক্রিকেট কূটনীতি দেখার সুযোগ পাই না। তাই ব্যাট বলের মেলবন্ধন আর দিন শেষে হার-জিত, এই নিয়েই সাধারণ ক্রিকেটামোদীদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কিভাবে তিনবার বিশ্বকাপের ফাইনালের আসরে খেলা একটি শক্তিশালী দলকে গত বিশ বছরের মধ্যে রেংকিংয়ের তলানীতে নিয়ে ঠেকাতে পারে, সেই নজিরও থাকছে বইটির পাতায়। এছাড়াও বিশ্ববাজারে পন্য বিপণনে ক্রিকেটের ভুমিকা, এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলোও ফুটে উঠেছে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়ের সুনিপুণ দৃষ্টিতে। আজকের বাজারে বিস্কুট, ইলেক্ট্রনিক্স, চিপস, টয়লেট্রিস, সর্বক্ষেত্রে ক্রিকেট ও ক্রিকেটাররা মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে হরহামেশাই। বইটি ঘেঁটে একটি উদাহরণ দেয়া যায়। মাত্র কয়েক বছর পূর্বেই ভারতে ‘পরিবর্তন প্রোগ্রাম’ নামে একটি কর্মসূচী নেয়া হয়েছিলো, যেখানে ক্রিকেটের মাধ্যমে তরুণদের মাদকের কুফল এবং নারী নিপীড়নের ভয়াবহতার ব্যাপারে সচেতন করার চেষ্টা হয়েছে। আশ্চর্যজনক তথ্য হচ্ছে একসময়ে মানুষকে যুদ্ধে যোগদানের প্রেরণা হিসেবে ক্রিকেট খেলাকে বেছে নেয়া হয়েছিলো। সেই বয়ানও পাওয়া যায় বইয়ের পাতা ধরে এগিয়ে গেলেই। ‘লগান’ এর মতো কিছু মুভিও নির্মাণ হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে। দর্শকের সাধারণ চোখে ক্রিকেট কেবলই রানের খেলা বা ব্যাট-বলের লড়াই হলেও, প্রকৃত ও বিশুদ্ধ ক্রিকেটের আচরণ আসলে তা নয়। এটা সম্পূর্ণ স্কিলের খেলা। বর্তমানে প্রত্যেক ক্রিকেট কোচ স্বীকার করেন ক্রিকেট খেলাটা সত্তর থেকে আশি ভাগই মানসিক দক্ষতা, বাকী বিশ থেকে ত্রিশ ভাগ দৈহিক। খেলোয়াড়রা এখানে নিজেদের স্কিল বিনিয়োগ করতে আসেন, সেই স্কিলের সঙ্গে মানসিক স্কিলের সংমিশ্রণে একজন খেলোয়াড় হয়ে ওঠেন তারকা। শুধু ক্রিকেট খেলাই নয়, একজন ক্রিকেট তারকা বিশ্ববাজারেও আবশ্যিক হয়ে ওঠেন। আর তাই মাঝে মাঝে হলুদ সাংবাদিকতার কুচক্রি মহল ধরা সম খেলোয়াড়কে সরা সম উপস্থাপন করেন। এর পেছনে দায়ী বিশ্ববানিজ্য। সেই সমস্ত হলুদ সাংবাদিকতার অগ্র-পশ্চাৎ ও খেলোয়ারদের ক্যারিয়ারে এসব কীর্তিকলাপের প্রভাব নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে বইটির বেশ কিছু অংশে। তাছারাও ক্রিকেট বিশ্বে ভারতের একক আগ্রাসন; আই.সি. সির নীরবতা; যেখানে ফুটবল বিশ্বকাপে বত্রিশটি দলের সমাগমে বিশ্বে ফুটবলের বাজার তুঙ্গে, ক্রিকেটের বাজার ধরতে দল সংখ্যা না বাড়িয়ে উল্টো কমানোর পায়তারা, ‘বিগ-থ্রী’ দ্বারা ক্রিকেটিয় নীরব মেরুকরণ, এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদির মিশেলেই বইটির আত্মপ্রকাশ। বাদ যায় নি যুগের আপদ ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ এর বর্ণনাও। এমনও হতে পারে আপনি নিজেও একজন ম্যাচ ফিক্সার! হয়তো চায়ের দোকানে বসে আপনিও পরোক্ষভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন এই অবৈধ লীলায়! বইটি পড়লে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান সম্পর্কে সচ্ছ হতে পারবেন। বইটির চমকপ্রদ খ-াংশগুলো হচ্ছে বিভিন্ন কিংবদন্তি, আলোচিত বা সমালোচিত, সাবেক বা বর্তমান ক্রিকেটার বা ক্রিকেটে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে লেখকের লেখা চিঠিগুলো। শেন ওর্য়ান, শচিন টেনডুলকার, ডেভিড শেফার্ড, স্টিভ বাকনার, টনি গ্রেগ, মাইকেল হোল্ডিং, রাহুল দ্রাবিড়, স্টুয়ার্ড মেকগিল, শোয়েব আক্তার, কেভিন পিটারসন, কেরি প্যাকার, শ্রী নিবাস, আশরাফুল, হ্যান্সি ক্রোনিয়ে, এডাম গিলক্রিস্ট, ধোনি, আকরাম খান, ওয়াকার ইউনুস, প্রমুখ ব্যাক্তিদের কাছে নিজের জিঘাংসা চিঠির মাধ্যমে ব্যক্ত করেছেন লেখক মাহফুজুর রহমান সিদ্দিকী হিমালয়। নিজ দেশের ক্রিকেটের প্রতি আলোকপাত করতেও কার্পণ্য করেন নি লেখক। বাংলাদেশে বড় পরিসরে ক্রিকেটের বাজার রয়েছে। বাংলাশের ম্যাচ চলাকালে এদেশের ক্রিকেটামোদী লোকের উত্তেজনা সেটাই প্রমান করে। একটা সময় একজন ধারাভাষ্যকার এমন মন্তব্য করেছেন- ‘বাংলাদেশ টিমের ব্যাটসম্যানদের থেকে আমার দাদী ভালো ব্যাটিং করেন।’ সেই যুগ কটাক্ষ থেকে বেরিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেট উন্নতি করে ‘বাংলা ওয়াস’ শব্দটি ছুড়ে দিয়েছে কমেন্ট্রি বক্সে। এই দীর্ঘ পরিব্রাজনে কার কার ভুমিকা উল্লেখযোগ্য, আর আমরা যেটাকে সফলতা ভাবছি সেটা কি আসলেই সফলতা কিনা, সে বিষয়ে লেখকের ব্যক্তিগত ক্রিকেট দর্শন বইটির পাতা থেকে ঠিকরে বেরোয়। লেখকের বিবেচনায় বাংলাদেশের পাঁচটি সেরা ওয়ান ডে এবং পাঁচটি টেস্ট ম্যাচ, এছাড়াও দেশি বর্তমান ও প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সেরা অবদান নিজ বইয়ে রিভিউ করেছেন লেখক নিজেই। এগুলো তাঁর চোখে সেরা হবার যথাযথ যুক্তিও উপস্থাপন করেছেন।
মোদ্দাকথা, ক্রিকেটের বিহাইন্ড দ্য সিন এবং এর অতীতের শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যৎ ধারণা করার প্রয়াস বইটিতে সুস্পষ্ট। এছাড়াও লেখকের সহজ সাবলিল শব্দ প্রয়োগ, বাক্য নির্মাণে পটুতা, তথ্য বিন্যাশে মুন্সিয়ানা, সবমিলিয়ে ২৩২ পাতার এই বইটি প্রকৃত ক্রিকেট বোদ্ধাদের জন্য মাইলফলক বটে। আর সিজনাল দর্শকদের আমুদে চোখে বইটি যোগান দিতে পারে একটি নতুন দৃষ্টি। এমন একটি বই লেখার জন্য লেখককে কৃতজ্ঞতা জানানো যেতেই পারে।
Read More
Was this review helpful to you?
By Wasifa Zannat,
18 Apr 2016
Verified Purchase
ক্রিকেট লিটারেচার' এর এই বইটিকে নিয়ে বিভ্রান্তি এড়াতে প্রথমেই বইয়ের গঠনতন্ত্র নিয়ে সামান্য আলোচনা প্রয়োজন। বইটিতে দ্বিস্তরে সাজানো নিবন্ধের মধ্যে মূল নিবন্ধের সংখ্যা ১১টি। প্রতিটি মূল নিবন্ধের শেষে রয়েছে উদ্বৃত্ত নিবন্ধ, যে বক্তব্যগুলো মূলত চিঠির আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে। বইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র 'পিচ', যে কিনা একাই প্রায় ২৩টির মতো চরিত্রে অভিনয় করেছে। গোপনে বলে রাখি, 'এই পিচের বসবাস মাঠে নয়, মাথার ভেতরে'। বইটিতে একটি ক্রিকেট ম্যাচের গল্প আছে, যেখানে মূল নিবন্ধ আর উদ্বৃত্ত নিবন্ধ মুখোমুখি লড়াই করতে নেমেছে কোন একটি চমকপ্রদ ফলাফলের জন্য। এই চমকপ্রদ ফলাফলটির নাম 'অতিউদ্বৃত্ত নিবন্ধ'।
শুরুটা হয়েছে 'চা বিরতিতে বার্তা' শিরোনামে। যেহেতু বইটি ক্রিকেট ও কথাসাহিত্যের এক তাত্ত্বিক সমন্বয়, তাই এখানে বল, ব্যাট, বিলবোর্ড বা পিচের সাথে সাথে দর্শকের (এখানে অবশ্য পাঠক) বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। চা বিরতিতে তাই টিভি সেটের (বইয়ের) সামনে থেকে চোখ না তুলে বরং নড়েচড়ে বসুন। 'আম্পায়ার স্যার, খেলা শুরু হোক।'
'বিশ্ব ক্রিকেটে বশ্য বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রবন্ধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের একটু একটু করে বেড়ে ওঠার, জায়গা দখল করার কাহিনী বৃত্তান্ত করা হয়েছে। এই অংশটুকু পড়ার জন্য ক্রিকেট কূটনীতির ব্যাপারটা বোঝা জরুরি। ১৯৯৭-২০০০ সাল অর্থাৎ তিন বছরের ঘটনার উপর্যপুরি পালাবদল, ৫ বছরের শিশুকে ২৫ বছরের যুবকের ন্যায় আচরণে বাধ্য করার মতো অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারে লেখকের 'স্বাক্ষ্য প্রমাণ বর্তমান' বক্তব্যে ওয়ানডে ও টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির ঐতিহাসিক ও অনৈতিহাসিক ঘটন-অঘটনের অবয়ব উঠে এসেছে। 'বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড' এর কূটনৈতিক দক্ষতার সাথে সাথে ক্রিকেটকে ব্যবসায়িকভাবে সফল করার সফলতার প্রেক্ষাপটও আছে এতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আইকনদের ধারাবাহিক আলোচনাকে অনেকটা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের মতো মনে হয়েছে। ভীষ্ম-দ্রোণ-কর্ণের মতো এখানে ক্রিকেটের ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির হাল ধরেছেন একের পর এক সুপারস্টার আশরাফুল-মাশরাফি-অলক কাপালী-সাকিবরা। এছাড়াও টেস্ট ক্রিকেট ও ওয়ানডের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রতিদ্বন্দ্বীতা, স্পিন-পেসের দ্বন্দ্ব আলোচনার দাবী রাখে।
'পিচ' প্রথম চিঠিটি লিখেছে সর্বশেষ ২০ বছরের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুইজন খেলোয়ার শচীন টেণ্ডুলকার ও শেন ওয়ার্নকে। শচীনের ধারবাহিকতা ও সেঞ্চুরি-কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা থেকে শুরু ওয়ার্নের টালমাটাল ব্যক্তিগত জীবনকেও তুলে ধরা হয়েছে এখানে। ২০০০ সালে উইজডেনের গত শতাব্দীর অলটাইম গ্রেটদের নিয়ে করা একাদশে সর্বশেষ ২০ বছরের ক্রিকেটারদের মধ্যে ছিলেন শুধুমাত্র এই দুইজনই। এখন দু'জনে সাবেক ক্রিকেটারদের নিয়ে আমেরিকায় একটি ক্রিকেট লীগ শুরু করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন।
ক্রিকেট খেলার জনপ্রিয়তা, জনপ্রিয় হওয়ার মনোস্তাত্ত্বিক কারণ, গ্রহণযোগ্যতাতা, ক্রিকেটদর্শন সাইকোলজিকে অনিশ্চয়তা তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা, ক্রিকেটের মধ্যকার অদৃশ্য শীতল যুদ্ধ- এসব নিয়েই এগিয়েছে 'ক্রিকেট দর্শন, আবেদন সংবেদন' নিবন্ধটি। এ পর্যায়ে পিচ চিঠি লিখেছে ডেভিড শেফার্ড ও স্টিভ বাকনারকে।
ম্যাচ ফিক্সিং আদতেই অপরাধ কি না, এটি কি সামাজিক অপরাধ না কি আরও বড় কিছু, এটি যদি দুর্নীতির সমমান অপরাধ হয় তবে এর শাস্তি কেমন হওয়া উচিত, ফিক্সিং-এর পেছনে যে বাজিকররা উস্কানিদাতা হিসেবে থাকে তাদের থেকে ক্রিকেটারদের দায়-ই কি বেশি, ক্রিকেটকে বাজিমুক্ত করতে আইসিসির ভূমিকা কতটুকু এসব নিয়েই লেখা হয়েছে 'ম্যাচ ফিক্সিং বনাম ফিনিক্স পাখির অপলাপ' নিবন্ধটি। পাঠক এখানে বইয়ের বক্তব্যের সাথে মনোস্তাত্ত্বিক বিতর্কে উপনীত হবেন এবং নিজস্ব মতামত দেওয়ার জায়গা খুঁজে পাবেন বলে আশা করি।
এছাড়াও বাকি প্রবন্ধগুলোতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বিগত ২০ বছরের পট পরিবর্তন, ক্রিকেটকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া, এ বিষয়ে বাংলাদেশের অভিভাবকদের চিন্তাভাবনা নিয়ে বিশ্লেষণ, অধিনায়কত্ব, বাংলাদেশের কিছু বিশেষ ম্যাচসমূহের বিশ্লেষণ, ক্রিকেটারের মনোস্তত্ত্ব, খেলার সাথে ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত জীবনের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি মূল নিবন্ধের পরেই উদ্বৃত্ত নিবন্ধে পিচের লেখা চিঠিগুলোতে প্রাপকদের নাম দেখে কৌতুহল বাড়ে। একটি চিঠির গন্ডিতে আবদ্ধ ক্রিকেটারদের মধ্যে কোন না কোন সম্পর্ক, দ্বৈরথ বা ক্রিকেটীয় প্রতিভার তুলনামূলক আলোচনা রয়েছে এগুলোতে।
সবশেষে স্বপ্নের ক্রিকেট দল 'টিম রকমারি' নিয়ে লেখকের সাক্ষাৎকার। ক্রিকেট দল, ক্রিকেটার, স্বচ্ছতা, বিনয়, এগিয়ে চলার প্রতিশ্রুতি, একটি সত্যিকারের প্রায় 'নিখুঁত' হয়ে ওঠার চেষ্টায় এই ক্রিকেট দলের যাত্রার কথা বলেছেন তিনি।
শুধু মাঠের খেলা হিসেবে যারা ক্রিকেটকে দেখছেন, একসময় হয়তো একে স্বাদহীন নিছক বিনোদন মনে হতে পারে। কিন্তু দৃষ্টিসীমানাটা বড় করতে পারলে, ক্রিকেটের সাথে জীবনের, জীবনের সাথে ক্রিকেটের অনেককিছু জড়াতে বাধ্য।
Read More
Was this review helpful to you?
By Mitul Rahman Ontor,
20 Jan 2016
Verified Purchase
বাংলাদেশে ক্রিকেট বিষিয়ক ভিন্নমাত্রার বই খুবই কম! যেসব লেখা হয়েছে সেগুলোর প্রায় সবই ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগ দিয়ে দায়সাড়াভাবে লিখা ফেলা! তবে একদম যে ভিন্নমাত্রার মানসম্পন্ন বই নেই তা কিন্তু নয়! সাকিব, মাশরাফির উপর জীবনি লেখা হয়েছে; বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্র এবং মোস্তফা মামুনও কিছু ভিন্নধারার বই লিখেছেন. তবে নিঃসন্দেহে এতসব কিছুর পরেও বলতে হবে, হিমালয় ভাইয়ের 'বেনিফিট অব ডাউট' এতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে!
'বেনিফিট অব ডাউট' অত্যন্ত চিন্তাশীল লেখা এবং নিঃসন্দেহে বলা যায় লেখক ক্রিকেট সম্পর্কে প্রজ্ঞার জ্ঞান ধারন করেন। ক্রিকেটের বিষয়বস্তু বিস্তর! প্রত্যেক ক্রীড়াপ্রেমী সেই বিস্তর বিষয় নিয়ে নিজের নিজের স্পষ্ট ধারণা পোষণ করেন; কিন্তু সেগুলি লেখায় নিয়ে আসার দুঃসাধ্য সাধন করেছেন মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়! ক্রিকেটের ব্যাপক পরিসরের অনেকটাই লেখক তাঁর বইয়ে নিয়ে আসতে পেরেছেন। প্রত্যেক অধ্যায়ের শেষে তিনি বিভিন্ন ক্রীড়া ব্যক্তিত্যদের খোলা চিঠিও পাঠিয়েছেন!
লেখক তাঁর বই শুরু করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাস নিয়ে। লেখক অত্যন্ত দক্ষভাবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রবেশ, আইসিসি ট্রফি জেতা, বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ, টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া... বাংলাদেশের ক্রমাগত হারতে থাকা, আশরাফুল, মাশরাফি, সাকিব-তামিমের মত তারকাদের দলে অন্তর্ভুক্তি তুলে ধরেন।
তারপর বইয়ে আসতে থাকে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা, দর্শকদের মান, সমর্থক হিসেবে আমাদের অবস্থান। এখানে লেখকের লেখা পড়ে সহজেই বোঝা যায় দর্শক হিসেবে আমরা কতখানি পিছিয়ে আছি! আবার, শুধু ক্রিকেট যে দেশপ্রেমের মানদণ্ড হতে পারে পারে না... তাও লেখক তাঁর লেখায় ভালোই বুঝিয়েছেন!
এরপর লেখায় আসে, ক্রিকেটের ঐতিহ্য, প্রত্যেক দেশের অবস্থান এবং বিগত ২০ বছরে ক্রিকেটের দৃশ্যপট বদলানো! প্রত্যেক ফরম্যাটের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ ক্রিকেট নিয়েও লেখক আলোচনা করেন। ক্রিকেটের পরিসর বৃদ্ধি করতে নতুন ধরণের ক্রিকেট ফরম্যাটের অন্তর্ভুক্তির কথাও লেখক বলেন।
ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নিতে আমাদের দেশে কি কি প্রতিকূলতা আসে, বা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় সেটি লেখক তুলে ধরেন। আমাদের ক্রিকেট উন্নতির জন্যে করণীয়গুলিও এই অধ্যায়েই চলে আসে। লেখক ফিক্সিং এবং ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকা ক্রিকেটারদের ক্রিকেটে ফিরা আসার কথা তুলে ধরেন। তার পরবর্তী অধ্যায়ে আলোচনা চলে অধিনায়কত্বের কৌশল নিয়ে।
তারপর বইয়ে হঠাৎ করে চলে আসে, বাংলাদেশের নির্বাচিত ওয়ানডে এবং টেস্ট ম্যাচগুলির সারসংক্ষেপ। বাংলাদেশের সেরা ব্যাটিং আর বোলিং পারফরমেন্স। শেষ দুটি অধ্যায় ক্রিকেটারদের মেন্টালিটি ট্রেনিং এবং রকমারি টিম'এর কার্যক্রমের উপর।
পুরো বইটিকে এক কথায় অসাধারণ বলতে হবে। তবে আরো অনেক দিক থেকে বইটিকে আরো উন্নত করা যেত। সমালোচনা না, তবে অনেক উন্নতির জায়গা ছিল যা লেখকের দৃস্টি এড়িয়ে গেছে সেগুলি নিয়ে একটু কথা বলি।
সর্বপ্রথমত বলতে হবে অধ্যায় সাজানো নিয়ে। ক্রিকেটার হওয়ার প্রতিকূলতা অধ্যায়টি পিছিয়ে, টিম রকমারি নিয়ে অধ্যায়ের ঠিক আগে দেয়া উচিত ছিল। বাংলাদেশের নির্বাচিত ম্যাচগুলি শেষে দেওয়া যেত। আবার অনেকগুলি অধ্যায়ের প্রয়োজনীয়তা আসলেই ছিল না। যেমনঃ ফিক্সিং নিয়ে অধ্যায়টি। আবার কিছু কিছু বিষয় নিয়ে না লেখাটা অনেকটা খাপছাড়া দেখায়। যেমনঃ বাংলাদেশ দলের বর্তমান অবস্থা, প্লেয়ার এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে। আবার ক্রিকেটার হওয়ার পিছনে প্রতিকূলতা নিয়ে বলা হলেও, প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠার বিষয়ে তেমন কোনো জোর দেওয়া হয় নি! এবার আরেকটু ভিতরের সমস্যা বলতে গেলে বলতে হয় লেখক বইয়ে অনেক ভারি ভারি শব্দ ব্যবহার করে বইকে অনেক গুরুগম্ভীর করে ফেলেছেন। যেখানে চাইলেই বইটিকে আরো সহজভাবে লেখা যেত। নির্বাচিত ম্যাচ নিয়ে যে অধ্যায় সেটি হতে পারতো বইটির সেরা আকর্ষণ! তবে লেখক ম্যাচগুলির প্রতি মুহুর্তের উত্তেজনা তাঁর লেখায় নিয়ে আসতে পারেন নি! বইয়ে প্রতি অধ্যায়ের শেষে দীর্ঘ খোলা চিঠি অনেকক সময় পাঠকের বিরক্তির কারণ হয়ে যেতে পারে! আবার লারা এবং ক্যালিস'কে আলাদা করে বিশেষ চিঠি দিয়ে বই সমাপ্ত করাও অনেকখানি খাপছাড়া দেখায়।
এতকিছু শেষেও আমি বলব, 'বেনেফিট অব ডাউট' এর মত চিন্তাশীল বই বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম। এক বৈঠকে শেষ করার মত বই না হলেও, বলতে হবে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় একটি অনন্য বইয়ের সৃস্টি করেছেন। যার ক্রিকেট সম্পর্কে ধারণা খুবই কম, সে এই বই পড়ে যেমন ক্রিকেট বিষয়ে জ্ঞানী হয়ে যাবে। তেমনি অনেক ক্রিকেটবোদ্ধাও এই বইয়ের মাধ্যমে অনেককিছু জানতে পারবেন। এরকম অসাধারণ একটি বই ক্রিকেটপ্রেমীদের উপহার দেওয়ার জন্য, আমার পক্ষ থেকে লেখককে স্যালুট!!
Read More
Was this review helpful to you?
By shuvo rahman,
09 Nov 2015
Verified Purchase
বাংলাদেশে ক্রিকেট নিয়ে মৌলিক কোনো ভালো বই নেই। ক্রীড়া সাংবাদিকরা কয়েকটা বই লিখেছেন, কিন্তু সেগুলো আসলে পত্রিকায় প্রকাশিত পুরনো কলামের সংকলন। বেনিফিট অব ডাউট বইটি সম্পর্কে জানতে পারি ছোটভাইয়ের মাধ্যমে। বইটি পড়ে মনে হয়েছে এতোদিন ক্রিকেট খেলাটা শুধু দেথেই গেছি, এটা নিয়ে কখনো গভীরভাবে চিন্তা করিনি। এই বইয়ের সবচাইতে ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য, প্রত্যেকটি আর্টিকেলের শেষে চিঠি দেয়া হয়েছে। টেন্ডুলকার-শেন ওয়ার্ন, স্টিভ বাকনার- ডেভিড শেফার্ড, টনি গ্রেগ- মাইকেল হোল্ডিং, শোয়েব আখতার-হার্শেল গিবস- কেভিন-পিটারসেন, এডাম গিলক্রিস্ট- ধোনি-সাঙ্গাকারা, কেরি প্যাকার- এন শ্রীনিবাসন, জয়াসুরিয়া- ক্রিস গেইল, ওয়াকার ইউনিস- ব্রেট লি, আশরাফুল- ক্রনিয়ে, দ্রাবিড়- চন্দরপাল- ম্যাকগিল, আকরাম খান- মোঃ রফিক সবাই একটি করে চিঠি পেয়েছে। চিঠির মাধ্যমে তাদের সম্পর্কে অনেক কিছু জা্নতে পেরেছি। তবে জ্যাক ক্যালিস আর ব্রায়ান লারাকে আলাদা করে চিঠি লেখার যুক্তিটা ভালো লাগেনি। লারা টেন্ডুলকারের চাইতে প্রতিভাবান লেখকের এই দাবির সাথে আমি একমত না। এছাড়া ম্যাচ ফিক্সিং আর অধিনায়কত্ব বিষয়ে যে আর্টিকেল দুটো আছে সেখানকার অনেক বক্তব্যই মানতে পারিনি। ক্রিকেট খেলা যে দেশপ্রেম না, এই ব্যাপারে লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি ভালো লেগেছে। সবমিলিয়ে বইটি দারুণ।
Read More
Was this review helpful to you?
By Adnan Waled Aunto,
06 Jan 2016
Verified Purchase
আমার ক্রিকেট সম্পর্কে খুব একটা ধারনা নেই। এই বই পড়ে ক্রিকেট এর ইতিহাস, ঐতিহ্য ও ধরন সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছি। এই বইটিতে কি করলে ক্রিকেট এর উন্নয়ন হবে, কিভাবে ভালো ক্রিকেটার বের হয়ে আসবে ইত্যাদি খুব ভালো ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু কিভাবে ভালো ক্রিকেটার হওয়া যায় তা লিখা হয়নি। এই বইতে ক্রিকেট বিজ্ঞাপনের ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কিভাবে ভালো ব্যাটসম্যান কিংবা ভালো বোলার হওয়া যায় সে সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই। আমি মনে করি একজন ক্রিকেটার আর একজন ক্রিকেটার খেলোয়াড় এই দুটি শব্দের পার্থক্য যদি তুলে ধরা হতো তাহলে আমার মতো ক্রিকেট অজ্ঞদের জন্য অনেক ভালো হতো। তবে আমাদের দেশের ক্রিকেট খেলার সার্বিক পরিস্থিতি যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তার জন্য লেখককে অনেক ধন্যবাদ। এই ধরনের লিখা শুধুমাত্র একজন ক্রিকেট বোদ্ধার পক্ষেই লেখা সম্ভব।